অস্ট্রেলিয়ায় মাসের পর মাস ধরে চলা ভয়াবহ দাবানলের মধ্যে এবার সবচেয়ে বড় শহর সিডনিতে স্বস্তি এনে দিয়েছে প্রবল বৃষ্টি। কয়েক মাস ধরে যার দেখা ছিল না, সেই কাঙ্ক্ষিত ঘনঘোর বর্ষার এমন রূপ দেখে বাঁধভাঙা উচ্ছ¡াসে ভেসেছেন নগরবাসী। তবে বৃষ্টির কারণে সিডনিতে কোনো কোনো জায়গায় দেখা দিয়েছে আকস্মিক বন্যা। গত সেপ্টেম্বর থেকেই ধরে দাউ দাউ করে জ্বলছে অস্ট্রেলিয়ার বনজঙ্গল। আগুনের বলয়ে আটকা পড়েছে বহু মানুষ। মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২৪ জনের। তাপমাত্রা সময়ে সময়ে অসহনীয় হয়েছে। দমকলকর্মীরা আগুনের সাথে লড়াই করতে করতে হয়েছে ক্লান্ত-শ্রান্ত। খরায়, দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষকরাও।
অবশেষে বৃষ্টি থৈ থৈ পানিতে চার দিক ভরিয়ে দিয়ে প্রতিটি মানুষকেও আনন্দের বন্যায় ভাসিয়েছে। নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের রাজধানী সিডনি এবং এর আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকাসহ উত্তর উপক‚লের দাবানলে পুড়ে ছারখার হওয়া এলাকাগুলোতে গত শুক্রবার বজ্রবিদ্যুৎসহ এ ঝড়বৃষ্টি হয়েছে। ভিক্টোরিয়া ও কুইসল্যান্ডেও দাবানলের আগুন নিভিয়ে দিয়ে ঝরেছে অঝোরধারায় বৃষ্টি। স্বস্তির বৃষ্টিতে দাবানলের উত্তাপ কিছুটা কমলেও এবার দেখা দিয়েছে নতুন বিপদ। গতকাল শনিবার দেশটির পূর্ব উপকূলীয় এলাকায় প্রবল বর্ষণের ফলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে। অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া, নিউ সাউথ ওয়েলস (এনএসইউ) ও কুইন্সল্যান্ডে প্রবল বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এ তিনটি রাজ্য কিছু দিন আগে ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছিল। বাজে আবহাওয়ার কারণে কুইন্সল্যান্ডের প্রধান সড়কগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। নিউ সাউথ ওয়েলসের কিছু অংশও এখন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন।
এই বৃষ্টিপাত দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ সাহায্য করছে বলে জানিয়েছেন দেশটির দমকলকর্মীরা। তবে নিউ সাউথ ওয়েলসে প্রবল বর্ষণ ও ঝড়ের ফলে বেশ কিছু এলাকায় বন্যা সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। দমকলকর্মীরা জানিয়েছেন, দাবানল নিয়ন্ত্রণে তারা বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট ‘অনুকূল পরিস্থিতি’ ও শীতল আবহাওয়ার সুবিধা পাচ্ছেন। তবে ৭৫টি জায়গায় এখনো আগুন জ্বলছে। কিছু দিন আগেও এই সংখ্যা এক শ’র বেশি ছিল। স্থানীয় দমকল বিভাগ এক টুইট বার্তায় জানিয়েছে, আগুনে জ্বলতে থাকা বেশ কিছু এলাকায় বৃষ্টি পড়ছে, তবে দূরবর্তী দক্ষিণ উপক‚ল এবং ওই এলাকার সীমান্তে এখনো আর্দ্রতা পৌঁছায়নি। গত কয়েক মাসে অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে সবচেয়ে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে কুইন্সল্যান্ডে। বেশ কিছু প্রধান সড়ক ও আবাসিক এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। সূত্র : নিউ ইয়র্ক টাইমস।