ভারতের জাতীয় নাগরিকপঞ্জি এনআরসিতে সংখ্যাগুরুদের উদ্বেগের কারণ আছে। বিশ্লেষকরা এর এনআরসি প্রক্রিয়া পর্যালোচনা করে এমন আশঙ্কার কথা তুলে ধরেছেন। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন দফতরের ‘বাবু সংস্কৃতি’ ফের চাগার দিয়ে উঠবে। বাড়বে দুর্নীতি ও আম আদমির হেনস্থা। হয় ঘুষ দাও, নয় এনআরসি-তে সন্দেহভাজন হয়ে থাকো। হিন্দু হোক বা মুসলিম- যেকোনো নাগরিককে এমন অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতেই হবে। এমন দাবি সাম্প্রতিককালে করেছেন বিশ্লেষকরা। এ বিষয়ে বিজেপিপন্থী এক বুদ্ধিজীবীর টুইট, “আমরা সবাই নিচুতলার দুর্নীতিগ্রস্থ অফিসারদের দ্বারা হয়রান হবো। সরকারি অফিসারেরা ঘুষ চাইবে, আপনাকে হুমকি দেবে, আপনাকে তালিকার বাইরেও করে দিতে পারে। এই যে মানসিক অত্যাচার এর কোনো ক্ষতিপূরণ নেই।”
এই বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে সাহিত্যিক চেতন ভগত টাইমস অফ ইন্ডিয়াতে লিখেছেন, এনআরসি রূপায়ণের ক্ষমতা পাচ্ছেন সরকারি বাবুরা। এই ক্ষমতা ওদের আলাদা উদ্দীপনা দেবে। এবং সেখানে আসবে ঘুষের টাকা নিয়ে দরদাম। যত কঠিন নিয়ম, নিয়মভঙ্গের ‘পারিশ্রমিক’ তত বেশি। যদি আপনি সেই ‘পারিশ্রমিক’ দিতে না পারেন, তাহলে সেই বাবু আপনার বার্থ সার্টিফিকেটও বাতিল করবে। বলবে, এটা এনআরসি-র নথি না। এরপর আপনাকে ২০ বছর ধরে কোর্টের চক্কর কাটতে হবে। প্রমাণ করতে হবে ওটাই আপনার এ দেশে জন্মের সার্টিফিকেট। এ বিষয়ে মতামত রেখেছেন নোবেল জয়ী অর্থিনীতিবিদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। তার আশঙ্কা, সরকারি কর্মকর্তাদের হাতে বাড়তি ক্ষমতা দেওয়া বিপজ্জনক।
তিনি সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে বলেন, “এমনটা হতেই পারে এনআরসি’র দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসে আপনাকে বলল, তালিকায় আপনার নাম রাখব না। বা পরেরবার রাখব, যদি আপনি ১০ হাজার টাকা ঘুষ দেন। এখানেই মূল হয়রানি। তাই বিশেষজ্ঞদের পর্যালোচনা বিশ্লেষণ করে দাবি করা হচ্ছে, ডিটেনশন ক্যাম্পের চেয়ে তালিকায় নাম রাখাটা বেশি উদ্বেগের। সেক্ষেত্রে মুসলিমদের পাশাপাশি হিন্দুরাও ভুক্তভুগী হবেন। ‘প্রাপ্য’ না মেটালে হয়রানির শিকারও তারা হতে পারেন। যেমনটা বলেছেন চেতন ভগত। বছর কেটে যাবে আপনার এটা প্রমাণ করতে, এদেশেই আপনি জন্মগ্রহণ করেছেন।
সূত্র : এনডিটিভি