যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে গঠিত ‘বাংলাদেশ লিবারেশন ওয়্যার ভেটার্নস ১৯৭১, ইউএসএ ইনক’র আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে ১৮ জানুয়ারি শনিবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। জ্যাকসন হাইটসে পালকি চায়নিজ সেকশনে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বছরের যে কোন একটি দিনকে ‘মুক্তিযোদ্ধা দিবস’ ঘোষণা, মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী ভাতা বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা নির্দ্ধারণ, একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি জাতীয় কমিটির মাধ্যমে সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা (ডিজিএফআই) কর্তৃক তদন্তপূর্বক সংবিধানে মুক্তিযোদ্ধাদের স্থান দিয়ে একটি তালিকা তৈরী আহবান জানানো হয়। একইসাথে দুর্বৃত্তদের কবল থেকে রাজনীতিকে মুক্ত করে বাংলাদেশকে দুর্নীতি মুক্ত করার দাবির পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলমান একটি প্রগতিশীল আর্থিকভাবে স্বয়ম্ভর গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে প্রবাসের মুক্তিযোদ্ধারাও নিয়োজিত থাকার সংকল্প ব্যক্ত করা হয়।
নবগঠিত এই সংগঠনের প্রেসিডেন্ট হয়েছেন একাত্তরের গেরিলা এবং পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণের জন্যে কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশগ্রহণকারি গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ। সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন বরিশাল অঞ্চলের গেরিলা ফারুক হোসাইন। সংগঠনের নির্বাহী কমিটির কর্মকর্তাগণের সকলেই একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারি গেরিলা। তাদেরকে পাশে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ বলেন, প্রবাস প্রজন্মকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানানোর পাশাপাশি বাংলাদেশে একাত্তরের ২৫ মার্চ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত দীর্ঘ ৯ মাসে পাক হায়েনাদের চালানো গণহত্যার ভয়ংকর ঘটনাবলি মার্কিন রাজনীতিকসহ আন্তর্জাতিক মহলকে অবহিত করা এবং জাতিসংঘে ঐ গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা চালাবে এই সংগঠন। শুধু তাই নয়, যুদ্ধফেরতদের যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার যেধরনের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে, তার সাথে বাংলাদেশেও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যে সমন্বয় ঘটানোর পদক্ষেপ নেবে সংস্থাটি। মুক্তিযোদ্ধারাও যাতে মার্কিন প্রশাসনের কাছে থেকে যোগ্য সম্মান লাভে সক্ষম হয় তা নিয়েও মূলধারায় দেন-দরবার চালাবে। একাত্তরের ঘাতক এবং বঙ্গবন্ধুর ঘাতক হিসেবে দন্ডিতরা যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে রয়েছে। এদেরকে বাংলাদেশে হস্তান্তরের জন্যে ফেডারেল প্রশাসনে চলমান দেন-দরবারে ভ’মিকা রাখবে এই সংগঠন। নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সিটিতে বসবাসরত রাজাকার-আল বদর এবং তাদের দোসর ছাত্র শিবিরের লোকজন লেবাস পাল্টিয়ে বিভিন্ন সংগঠনের আড়ালে এখনও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এদেরকে সামাজিকভাবে চিহ্নিত এবং বর্জনের জন্যে সোচ্চার থাকবে এই সংগঠনের সর্বস্তরের সদস্য-কর্মকর্তারা।
এই সংস্থার নির্বাহী কমিটির অপর কর্মকর্তারা হলেন: ভাইস প্রেসিডেন্ট-শওকত আকবর রীচি, খোরশেদ আনোয়ার বাবলু, রুহুল আমিন ভ’ইয়া, মেজর (অব:) মঞ্জুর আহমেদ বীর প্রতিক, মেজর (অব:) এহসান, রেজাউল বারি, বিএম জাকির হোসেন হিরু এবং সরদার আলাউদ্দিন, সহ-সাধারণ সম্পাদক-সাইদুর রহমান, আবুল মনসুর খান, মকবুল হোসেন এবং মনির হোসেন, কোষাধ্যক্ষ-শহিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক-আবুল বাশার, দপ্তর সম্পাদক-কামরুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক-মঞ্জুর আহমেদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক-আব্দুস সাদিক, আপ্যায়ন সম্পাদক-মো. হাই মঞ্জু। নির্বাহী সদস্যরা হলেন- লাবলু আনসার, মোতাহার হোসেন, ইউসুফ চৌধুরী, আবু তাহের এবং আবুল বাশার চুন্নু। উল্লেখ্য, নির্বাহী কমিটির সকলেই একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা।
সংগঠনের উপদেষ্টা পরিষদে রয়েছেন : মুক্তিযোদ্ধা-বিজ্ঞানী নূরন্নবী, মুক্তিযোদ্ধা মনিরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদ, কন্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায়, কন্ঠযোদ্ধা শহীদ হাসান, মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা মুন্সি বশীর আহমেদ, শহীদ পরিবারের সন্তান ডা. মাসুদুল হাসান এবং ফাহিম রেজা নূর, মূূলধারার রাজনীতিক মোর্শেদ আলম, ফার্মাসিস্ট জহিরুল ইসলাম এবং এম এ আওয়াল সিদ্দিকী, সাংবাদিক কৌশিক আহমেদ, মাহফুজুর রহমান এবং নিনি ওয়াহেদ, নূরে আজম বাবু, আলী আহসান কিবরিয়া অনু, মোল্লা মাসুদ, সুলতানউদ্দিন আহমেদ, ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ হাসান, খসরুল আলম, এডভোকেট আবু হোসেন হেলেন প্রমুখ।