মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:৪৬ অপরাহ্ন

নিউইয়র্কে উদীচীর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৪ নভেম্বর, ২০২২
  • ৯৫ বার

উদীচীর ৫৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ২৯ অক্টোবর শনিবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্র শাখা আয়োজিত অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্যে একুশে পদকপ্রাপ্ত কণ্ঠশিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ নাথ রায় বলেন, ‘উদীচী শুধু একটি গানের স্কুল নয়, উদীচী হচ্ছে একটি আদর্শ, উদীচী হচ্ছে অসাম্প্রদায়িক চেতনার উন্মেষ, উদীচী হচ্ছে সত্যেন দা’র স্বপ্নলালিত একটি সংগঠন, সত্যেন দা’র একজন মনীষি বলেই উদীচীর মত একটি সংগঠনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। এরকম একটি সংগঠনের দরকার সমাজের সার্বিক উন্নতি কল্পে।

যে সময় তিনি এটি শুরু করেছিলেন, তখন বাঙালিরা শোষিত-শাসিত ছিলাম এবং আমরা একটি মহান মুক্তিযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। সেই মুহূর্তে অর্থাৎ ১৯৬৮ সালে সত্যেন দা উদীচী প্রতিষ্ঠা করেন। সাথে ছিলেন আরেক মনীষি রনেশ দাসগুপ্ত। যাদেরকে দেখলে আমরা তরুণরা মাথানত করে শ্রদ্ধা জানাতাম।’

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের এই শিল্পী আরো বলেন, ‘আমি তো মনে করি শুধু জেলায় নয়, দেশের অনেক ইউনিয়নেও উদীচীর শাখা রয়েছে।

 

এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, অষ্ট্রেলিয়া,স্পেন-সহ বিভিন্ন দেশে এর শাখা রয়েছে। তারা যখন আমাকে ডাকে আমি সানন্দে সাড়া দেই। কারণ, সত্যেন দা’র এই কাজের জন্যে শুধু আমরা সাংস্কৃতিক কর্মীরাই ঋণী নই-গোটা বাংলাদেশটাই তার কাছে ঋণী। তিনি অসাম্প্রদায়িক চেতনা, গণতন্ত্রের পথ, এবং মানবিক মূল্যবোধের পথ-প্রদর্শকও ছিলেন। মানুষে মানুষে কোন বিভেদ থাকবে না-এমন শিক্ষা দিয়ে গেছেন আমাদেরকে।’

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. রফিকুল হাসান জিন্নাহ বলেন, উদীচীর নামটি যখন রাখা হয়েছিল তখন আমারও ধারণা ছিল না যে উদীচীর অর্থ কী। সত্যেন দা অনেক চিন্তা করেই নামটি রেখেছেন। আর এর অর্থ হচ্ছে উত্তরের নক্ষত্র। পথহারা নাবিককে পথ দেখানো। আর এই মন্ত্র শুধুমাত্র একটি দেশের জন্যে নয়, সমগ্র বিশ্বকেই পথ দেখানো। বিভ্রান্ত নাবিককে সঠিক পথের দিশা দেয়া। আপনারা যারা কলকাতায় শান্তি নিকেতনে গেছেন,সেখানে দেখেছেন যে উদীচী নামক একটি বাড়ি রয়েছে। তাই দীর্ঘ পথ-পরিক্রমায় এখন আমার মনে হয় উদীচী নামটা যথার্থ ছিল এবং এখনও তা যথার্থই রয়েছে। আজ কানাডা, আমেরিকা, ফ্রান্স এবং অন্যান্য দেশে উদীচীর পদচারণা দেখি, তখোন মনে হয় যে সত্যেন দা’র স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটাচ্ছে এই সংগঠন।

জিন্নাহ উল্লেখ করেন, শোষিত মানুষের কথা বলতে গেলেই সামনে আসে জাত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে যে মানুষ-তারই সংগঠন হচ্ছে উদীচী। এখন সেভাবেই কাজ করছে উদীচী।

সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত বিশ্বাস তার সমাপনী বক্তব্যে বলেন, অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তির সাথে সমঝোতা করে আওয়ামী লীগ আজ ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত রয়েছে। এরচেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে। এমন আপসকামিতার কারণেই আজ মৌলবাদি শক্তি সারা বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সক্ষম হচ্ছে। তাদের অবস্থান ও শক্তি বৃদ্ধি করছে। ওদের অপতৎপরতার কারণে গ্রাম-গঞ্জে এখন বাঙালি সংস্কৃতির চর্চা করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, উদীচীকে কোন অনুষ্ঠান করতে হলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়।

উদীচীর সাধারণ সম্পাদক আলিমউদ্দিনের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন সহ-সভাপতি শরাফ সরকার। শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন সহ-সাধারণ সম্পাদক লিলি মজুমদার, জ্যামাইকা শাখার সাধারণসম্পাদক আশিষ রায় এবং ব্রঙ্কস শাখার অন্যতম সংগঠক মো. মুকিত চৌধুরী।
দ্বিতীয় পর্বে উদীচীর শিক্ষার্থী শিল্পীসহ জনপ্রিয় শিল্পীরা নৃত্য-সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এঁরা হলেন লিলি মজুমদার, ফুলু রায় চৌধুরী, স্নিগ্ধা আচার্য্য, সুপর্ণা সরকার, পার্বতী রায়, হাফিজ চৌধুরী, বাবুল আচার্য, আশীষ রায়, প্রবীর দাশ দিপু, সুমন দে, সুচরিত দত্ত, আলীম উদ্দীন, সুলেখা পাল, সারিকা কর্মকার, শিশু শিল্পী শিবাদিত্য দত্ত, দেবাদিত্য দত্ত, সুদীপ্তা ধর, আদৃতা ধর। অতিথি শিল্পী ছিলেন রফিকুল ইসলাম, তোফাজ্জেল হোসেন এবং শাহীন দেলোয়ার। তবলায় ছিলেন۔ সুচরিত দত্ত, মন্দিরায় প্রবীর দাশ দীপু এবং বেহেলায় ছিলেন আদৃতা ধর।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com