বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান আসামি আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি ও ঘটনার পর ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত নয়ন বন্ডের বিয়ের বিষয়টি কারও অজানা নয়। আদালতে এ দুজনের বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছিল নিহত নয়নের সহযোগীসহ তার বাবা-মা ও বাসার আয়া। সর্বশেষ বিষয়টি আদালতকে নিশ্চিত করলেন নয়ন ও মিন্নির বিয়ের কাজি মো. আনিছুর রহমান।
আজ মঙ্গলবার বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে সাক্ষ্য দেন কাজি আনিছুর। এ সময় তিনি আদালতের কাছে নয়ন-মিন্নির বিয়ের রেজিস্টার ও বিয়ে সংক্রান্ত তথ্য বিবাহ নিবন্ধন বই (বালাম) উপস্থাপন করেন। আদালত সেটি গ্রহণ করেন।
এদিন মামলার অপর দুই সাক্ষী মো. কামাল হোসেন এবং মিনারা বেগমও সাক্ষ্য দেন। এ নিয়ে মামলার প্রাপ্তবয়স্ক আসামিদের বিরুদ্ধে ২৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন করলেন জেলা ও দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান।
মিন্নি ও নয়ন বন্ডের বিয়ের কাজি আনিছুরের সাক্ষ্য প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিফাত হত্যা মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মজিবুল হক কিসলু।
আদালতে যা বলেন বিয়ের কাজি
‘২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর মিন্নি ও নয়ন বন্ডের বিয়ে আমি সম্পন্ন করি। ওই দিন নয়ন বন্ডের কয়েকজন বন্ধু আমাকে তার বাসায় নিয়ে যায়। তখন বাসায় নয়ন বন্ডের মা এবং মিন্নিসহ অনেক লোক উপস্থিত ছিলেন। নয়ন বন্ডের বাসায় বসেই পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে মিন্নি ও নয়ন বন্ডের বিয়ে দেই আমি।’
আদালতকে কাজি আনিছুর বলেন, ‘বিয়ে সম্পন্ন করার পর আমি জানতে পারি মিন্নি বরগুনা পৌরসভার আবু সালেহ কমিশনারের ভাইয়ের মেয়ে। তখন আমি সালেহ কমিশনারকে আমার মোবাইল থেকে কল দিয়ে মিন্নি ও নয়ন বন্ডের বিয়ের খবর জানাই। তিনি আমাকে বিয়ের কথা গোপন রাখতে বলেন। এরপর মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরও আমাকে ফোন করে বিবাহের বিষয়টি গোপন রাখতে অনুরোধ করেন।’
রিফাত শরীফের সঙ্গে মিন্নির বিয়ের ব্যাপারে কাজি আদালতকে বলেন, ‘আমি জানতে পারি কুমারী পরিচয়ে রিফাত শরীফের সঙ্গে মিন্নির বিয়ে হয়েছে। রিফাত শরীফের সঙ্গে বিয়ের পরদিন মিন্নির বাবা আমাকে ফোনে বলেন, মিন্নি ও নয়ন বন্ড আগামীকাল আপনার কাছে যাবে। আপনি তাদের ডিভোর্স করিয়ে দিয়েন। কিন্তু মিন্নির বাবার কথা অনুযায়ী ওই দিন তারা আমার কাছে আসেনি। এর পরদিন ফোন করে আবারও আমাকে একই কথা বলেন মিন্নির বাবা কিশোর। ওই দিনও ডিভোর্সের জন্য মিন্নি ও নয়ন বন্ড আমার কাছে না আসায় মিন্নির বাবাকে ফোন দেই। তখন মিন্নির বাবা আমাকে জানান, ওরা দুজনে কমিটমেন্ট করেছে বিয়ের কথা কাউকে জানাবে না। গোপন রাখবে। আপাতত থাক।’
এর আগে গতকাল সোমবার একই আদালতে নয়ন-মিন্নির বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন মামলার তিন সাক্ষী মো. হেলাল সিকদার, মো. দুলাল খাঁন ও নয়ন বন্ডের বাসার আয়া মোসা. ফুলি বেগম।