রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ পূর্বাহ্ন

লন্ডনগামী উড়োজাহাজে শিশুর মৃত্যু

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
  • ২৭৮ বার

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের লন্ডনগামী উড়োজাহাজের ভেতরে এক শিশু যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। অনাকাক্সিক্ষত এ ঘটনায় বিমানের ফিরতি ফ্লাইট ৩ ঘণ্টা বিলম্বে ঢাকার উদ্দেশ ছেড়ে আসে। মারা যাওয়া শিশুটির ‘ফিট টু ফ্লাই’ সার্টিফিকেট ছিল বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যাওয়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নতুন প্রজন্মের ড্রিমলাইনার (বোয়িং-৭৮৭-৯০০ মডেল) ফ্লাইটটি বুধবার (স্থানীয় সময়) রাত ৯টা ৫০ মিনিটে হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। তবে ফ্লাইটটি অবতরণের দেড় ঘণ্টা আগেই উড়োজাহাজের ২/এফ সিটের যাত্রী শিশু জায়েদ আহমেদ (১১) হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ সময় শিশুটির সাথে ছিলেন তার মা-বাবা। বিষয়টি জানানোর পর কেবিন ক্রু ফ্লাইটে ডাক্তার যাত্রী আছেন কি না জানতে চান। তখন একজন যাত্রী নিজেকে চিকিৎসক জানিয়ে ওই শিশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। এভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর পাইলট হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। তখনই অ্যানাউন্স করে যাত্রীদের জানানো হয়, অসুস্থ শিশু যাত্রীটি মারা গেছে। এর পরই বিষয়টি হিথ্রো বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। পরে লন্ডন পুলিশের ক্লিয়ারেন্সসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করে ফিরতি ফ্লাইটটি বুধবার (স্থানীয় সময়) দিবাগত রাত ১২টা ১৫ মিনিটের পরিবর্তে ৩ ঘণ্টা বিলম্বে রাত ৩টা ১৫ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ ছেড়ে আসে।

গতকাল শনিবার রাতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মোকাব্বির হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে জনসংযোগ কর্মকর্তা তাহেরা খন্দকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও টেলিফোন ধরেননি।
গতকাল রাতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ওই ফ্লাইটের পাইলট ক্যাপ্টেন ইমরানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও বিস্তারিত তথ্য জনসংযোগ বিভাগ থেকে জেনে নেয়ার অনুরোধ জানান।

তবে ওই ফ্লাইটের দায়িত্বে থাকা একজন কেবিন ক্রু এবং একজন যাত্রী নয়া দিগন্তকে নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, উড়োজাহাজে মারা যাওয়া শিশু অটিস্টিক ছিল। বয়স ১০-১১ বছর হবে। তারা বলেন, শিশুটি অসুস্থই ছিল। উড়োজাহাজে অ্যানাউন্স করার পর ডাক্তার পেশার একজন যাত্রী শিশুটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। আর ঘটনাটি যখন ঘটে তখন হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে দেড় ঘণ্টার দূরত্ব ছিল। শিশুটি উড়োজাহাজে মারা গেলেও বিমানবন্দরে নামার পর লন্ডনের ডাক্তাররা দেখে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। এর আগে উড়োজাহাজে শিশুটিকে অক্সিজেন দেয়া হয়, তার হার্ট পরীক্ষা করেন ডাক্তার।
এক প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেন, প্রতিবন্ধী যাত্রী হলেও নিয়ম হচ্ছে ‘ফিট টু ফ্লাই’ সার্টিফিকেট থাকতে হবে। তা ছাড়া যেই অসুস্থ হোক তার জন্যই কেবিন ক্রু যদি মনে করেন, তা হলে তার কাছে ফিট টু ফ্লাইয়ের একটি সার্টিফিকেট দিতে হয়। মারা যাওয়া যাত্রীর বাবা মা কেবিন ক্রুদের জানিয়েছিলেন শিশুটির ‘ফিট টু ফ্লাই’ সার্টিফিকেট রয়েছে। ফ্লাইটে মা-বাবা ছাড়াও তাদের ফ্যামিলির অন্য সদস্যরাও ওই ফ্লাইটে ছিলেন। তারা বলেন, শিশু যাত্রী সিলেটের বাসিন্দা। লন্ডন বংশোদ্ভূত।

এ প্রসঙ্গে জানতে গত রাতে ওই ফ্লাইটের চিফ পার্সার ইতির সাথে যোগাযোগ করার পরও তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে জানানো হয়, এ বিষয়ে বিমানের জনসংযোগ বিভাগ থেকে তথ্য জেনে নিতে। তবে কেবিন ক্রু সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র নয়া দিগন্তকে নাম না প্রকাশের শর্তে শুধু বলেন, এখন দেখতে হবে শিশুটিকে যে ‘ফিট টু ফ্লাই’ সার্টিফিকেট দেয়া হয়েছিল সেটা কোনো ডাক্তারের কাছ থেকে নেয়া হয়েছিল। বিমানের ওই শিশু যাত্রী ক্ষতিপূরণ পাবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ক্ষতিপূরণ পাবে কি না সেটা বিমান ম্যানেজমেন্ট বলতে পারবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com