মুজিববর্ষ উপলক্ষে নিউইয়র্কে সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান হবে ২৮-২৯ মার্চ এবং এতে ৩১টিরও অধিক সাংস্কৃতিক-পেশাজীবী সংগঠনের শিল্পীসহ কবি-লেখক-সাংবাদিক-বুদ্ধিজীবী-সমাজসেবকরা অংশ নেবেন। ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ সম্মেলন’ শিরোনামে দুদিনব্যাপী এই কর্মসূচির আলোকে ৭ জানুয়ারি শুক্রবার সন্ধ্যায় এক প্রস্তুতি সভা থেকে আরো জানানো হয় যে, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন-ইতিহাস বহুজাতিক সমাজে ছড়িয়ে দেয়ার অভিপ্রায়ে প্রবাস প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। নতুন প্রজন্মের এই বাঙালিরাই ভিনদেশী বন্ধু-বান্ধবের কাছে বঙ্গবন্ধুকে সবিস্তারে উপস্থাপনে সক্ষম হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন এই সম্মেলনের কর্মকর্তারা। উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সার্বিক সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ এবং ইউএস কমিটি ফর সেক্যুলার এ্যান্ড ডেমক্র্যাটিক বাংলাদেশ যৌথভাবে এই কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এটি অনুষ্ঠিত হবে লাগোয়ার্ডিয়া এয়ারপোর্ট সংলগ্ন ম্যারিয়ট হোটেলের বলরুমে। দুদিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার বাজেট ধার্য করা হয়েছে লাখ ডলারের।
প্রস্তুতি সভার শুরুতেই এবছরের একুশে পদকে ভ’ষিত মুক্তিযোদ্ধা-বিজ্ঞানী-লেখক ড. নূরুন্নবীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। উল্লেখ্য, এই ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ সম্মেলন’ কমিটির আহবায়ক হচ্ছেন ড. নূরুন্নবী। এ সময় প্রদত্ত শুভেচ্ছা বক্তব্যে ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ সম্মেলন’ কমিটির সদস্য-সচিব ও নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী বলেন, ‘একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা নূরুন্নবী চার দশকেরও অধিক সময় যাবত এই প্রবাসে থাকলেও একমুহূর্তের জন্যে বঙ্গবন্ধু এবং তার অবদানকে ভুলে থাকেননি। পেশাগত জীবনের বাইরে ১৯৮৫ সাল থেকেই যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বর্তমান কমিটির তিনি হলেন সভাপতি। পাশাপাশি রনাঙ্গনের অভিজ্ঞতার আলোকে কয়েকটি গ্রন্থ রচনাও করেছেন নূরন্নবী। এসব কাজেরই মূল্যায়ন করলেন জাতিরজনকের যোগ্য উত্তরসূরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্যে প্রবাসীদের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’
মুজিববর্ষ আলোকে দুদিনব্যাপি সভা-সেমিনার-সিম্পোজিয়াম এবং বঙ্গবন্ধু কনসার্টের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে প্রধান সমন্বয়কারি যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, ‘এ উপলক্ষে নিউইয়র্কসহ বাংলাদেশী অধ্যুষিত সকল সিটিতে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সবগুলোতেই আমাদের অকুন্ঠ সমর্থন থাকবে। একইসাথে আমরাও আশা করছি নিউইয়র্কে সবচেয়ে বড় আয়োজনে দুদিনের কর্মসূচিতেও সর্বস্তরের প্রবাসীর সহায়তা পাবো। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারপার্সন শারমিন রেজা ইভা বলেন, এখন পর্যন্ত ৩১টি সংগঠন তালিকাভুক্ত হয়েছে অনুষ্ঠান করার জন্যে। সকলেই বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দিপ্ত প্রত্যয়ে এগিয়ে চলা বাংলাদেশ বিষয়ক অনুষ্ঠান তৈরী করছেন। মোট কথা অভ’তপূর্ব একটি সাড়া পরিলক্ষিত হচ্ছে মুজিববর্ষ ঘিরে।
কবি মিশুক সেলিম, সাংস্কৃতিক সংগঠক আবির আলমগীর, জীবন বিশ্বাস, মোশারফ হোসেন, কবীর কিরণ এবং সাংবাদিক আকবর হায়দার কিরন নিজ নিজ সাব কমিটির প্রস্তুতি-তৎপরতা উপস্থাপনকালে বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিরা আসবেন নিজ নিজ মতামত এবং অভিজ্ঞতার ডালি নিয়ে।
এ সময় প্রস্তুতি আলোকে আরো বক্তব্য রাখেন আব্দুল হাই জিয়া, রেফায়েত উল্লাহ চৌধুরী, মোস্তফা কামাল পাশা মানিক, আশরাব আলী খান লিটন, সুব্রত তালুকদার, স্মৃতি ভদ্র, শুক্লা সাহা প্রমুখ। সদস্য-সচিব জাকারিয়া চৌধুরী সকলকে অনুরোধ করেছেন নিজ নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের জন্যে। একইসাথে বিশাল এ আয়োজনে তহবিল সংগ্রহের জন্যেও সকলের প্রতি আহবান রেখেছেন। সভাপতির সমাপনী বক্তব্যে ড. নুরুন্নবী বলেন, নিউইয়র্ক অঞ্চলে সবচেয়ে বেশী বাংলাদেশী বাস করছি। তাই মুজিববর্ষ উপলক্ষে গৃহিত এই কর্মসূচিকেও সেভাবেই সাফল্যমন্ডিত করতে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।