স্ত্রীর ব্যবসায়িক স্বার্থ নিয়ে পার্লামেন্টের তদন্তের মুখে পড়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। পার্লামেন্টের ’কমিশনার ফর স্ট্যান্ডার্ডস’ গত ১৩ এপ্রিল থেকে এ তদন্ত শুরু করেছে। সোমবার কমিশনারের ওয়েবসাইটে শেয়ার করা তথ্যে এ কথা বলা হয়েছে। একটি চাইল্ড কেয়ার কোম্পানিতে সুনাকের স্ত্রীর অংশীদারিত্ব নিয়ে চলছে এ তদন্ত।সুনাক ওই কোম্পানিতে তার স্ত্রীর অংশীদারিত্বের কথা ঠিকমত ঘোষণা (ডিক্লেয়ারেশন অব ইন্টারেস্ট) করেছিলেন কিনা এবং সুনাক সরকারের ঘোষিত নতুন বাজেট নীতিতে তার স্ত্রী ব্যবসায়িক সুবিধা পাচ্ছেন কিনা- এসবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত কয়েকটি প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিরোধী দলগুলো সুনাকের স্ত্রী অক্ষতা মূর্তিকে ব্যবসায় সুবিধা পাইয়ে দিতে তার নতুন বাজেট নীতি প্রণয়ন করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল।ওইসব প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, গত মার্চ মাসের বাজেটে চাইল্ড কেয়ারের জন্য তহবিল সংক্রান্ত যে নীতি ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে উপকৃত হতে পারে সুনাকের স্ত্রী অক্ষতা মূর্তির ওই কোম্পানি। কোরু কিডস নামে একটি কোম্পানি রয়েছে অক্ষতার। মূলত শিশুদের নিয়ে কাজ করে থাকে কোম্পানিটি। গত মাসে বাজেট পেশকালে এ ধরনের সংস্থাগুলোর জন্য আলাদা প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক।
তারপরই সুনাকের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তাছাড়া, স্ত্রীর শেয়ার হোল্ডিংয়ের বিষয়টি নিয়মমাফিক রেজিস্ট্রার না করে সুনাক পুরো বিষয়টি লুকানোর চেষ্টা করেছেন বলেও অভিযোগ ওঠে। সুনাকের মুখপাত্র বলেছেন, তদন্তে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, মিনিস্ট্রিয়াল ইন্টারেস্ট হিসেবে কতটা স্বচ্ছতা অবলম্বন করা হয়েছে তা পরিষ্কার করতে কমিশনারের সঙ্গে আমরা সহযোগিতা করতে পেরে সন্তুষ্ট।
পার্লামেন্টের কোনও সদস্য আচরণবিধি সংক্রান্ত নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন কি না, তা নিয়ে সাধারণত তদন্ত করে কমিশনার ফর স্ট্যান্ডার্ডস। এমপি’দের আচরণবিধির ৬ নং অনুচ্ছেদের অধীনে এ তদন্ত হচ্ছে। এই অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, এমপি’রা তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট যে কোনও বিষয়ে সবসময়ই খোলাখুলিভাবে জানাতে বাধ্য।পার্লামেন্টারি এই তদন্ত ঋষি সুনাকের জন্য বিব্রতকর। গত বছর অক্টোবরেই সরকারের প্রতিটি ক্ষেত্রে সততা বজায় রেখে নেতৃত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি ক্ষমতায় এসেছিলেন। আগামী বছর জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাবনার মাঝে সুনাক দলের ভাগ্যও ফেরানোর চেষ্টা নিয়েছিলেন।এখন সুনাকের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া তদন্তে তিনি দোষী সাব্যস্ত হলে কেবল ক্ষমা চাইলেই হবে না। পদও হারাতে হতে পারে তাকে। দোষী প্রমাণিত হলে সুনাকের উপর নানা নিষেধাজ্ঞা চাপানোরও ক্ষমতা রয়েছে পার্লামেন্টের তদন্তকারী ওই কমিটির। সূত্র : যুগান্তর