ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের বেলাভূমি কুয়াকাটায় পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। এক মাস পর্যটক খরায় ভুগলেও তা কাটিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন পর্যটননির্ভর ব্যবসায়ীরা।
গত কয়েক দিন তীব্র গরমে জনজীবন স্থবির ছিল। তাই পর্যটকরা ঘর থেকে বের হয়নি। এখন কিছুটা গরম কমে যাওয়ায় ও ঈদের ছুটিতে কুয়াকাটায় হাজার হাজার পর্যটকের আগমন ঘটেছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। সমুদ্র সৈকতে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার পর পর্যটকরা ছুটে যান রাখাইনদের আদি কুয়া অথবা রাখাইন পল্লীতে। কুয়াকাটার জিরো পয়েন্টের কাছে রয়েছে নজরকাড়া প্যাগোডা। এ ছাড়া রয়েছে রাখাইন নারী মার্কেট, মিশ্রিপাড়ায় অবস্থিত এশিয়ার সর্ববৃহৎ সীমা বৈৗদ্ধ বিহার, ইকোপার্ক, লেম্বুরচর, শুটকিপল্লী, ইলিশপার্কসহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় স্থান।
পর্যটকরা বিচে ছাতার নিচে বসে সাগরের জল আর সূর্য রশ্মির রঙিন খেলায় মেতে উঠার অপরূপ দৃশ্য অবলোকন করেন। ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ সৈকতের গাঁ ঘেঁষে গঙ্গামতির সংরক্ষিত বনাঞ্চল, দক্ষিণে দৃষ্টিসীমা যতদূর যায় নীল জলরাশি, দিগন্তজুড়ে নীল আকাশের গায়ে আবির মাখানো দৃশ্য পর্যটকদের বিমোহিত করে। মোবাইল ফোনে সেলফি, ঘোড়ার পিঠে চড়া, গান গেয়ে আনন্দ উল্লাস করে আগত পর্যটকরা।
ঢাকা থেকে এখানে বেড়াতে আসা সোহাগ (২২) বলেন, ‘একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের দৃশ্য উপভোগ করা যায় একমাত্র কুয়াকাটায়। এ ছাড়া এখন গরম অনেকটা কম। ঘুরতে এসে অনেক মজা লাগছে।’
আবাসিক হোটেল ওসানভিউ-এর অপারেশন ম্যানেজার আল আমিন খান উজ্জল বলেন, ‘রমজান মাসে আমরা অলস সময় পার করেছি। ওই সময় পর্যটক আসেনি বললেই চলে। এখন প্রচুর পর্যটক এসেছে।’
কনফিডেন্স টুরিস্ট সেন্টারের অপারেটর মো. সবুজ মৃধা বলেন, ‘কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা পর্যটকরা আমাদের কাছে বিভিন্ন স্পটের তথ্য জেনে নেয়। আমরা পর্যটকদের সাধ্যমত সহায়তা করে থাকি।’
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল অনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ বলেন, ‘গত এক সপ্তাহ আগ থেকেই পর্যটকরা হোটেল বুকিং সম্পন্ন করেছে। কুয়াকাটার হোটেল-মোটেলগুলোর অধিকাংশ রিজার্ভ হয়ে গেছে। ঈদে রমজানের সংকট কিছুটা হলেও কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হব।’
টুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের পরিদর্শক হাসনাইন পারভেজ বলেন, ‘যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ কাজ করছে। পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে।’