গত রমজানের আগে হঠাৎ করে বেড়ে যায় সব ধরনের মুরগির দাম। এরপর ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করে ভোক্তা অধিদফতর মুরগির দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর রোজা শেষ হওয়ায় আগেই আবারো সব ধরনের মুরগির দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। কারণ হিসেবে বলেন, ঈদে গোশতের চাহিদা বেশি থাকে তাই ঈদের পরে আবার স্বাভাবিক দামে ফিরবে বাজার। কিন্তু ঈদ শেষ হয়ে গেলেও এখনো কমছে না মুরগির দাম। এরপর আবার সরবরাহ কমায় সবজির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। গতকাল রাজধানীর বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকায় । যা ঈদের আগে থেকেই চলছিল। লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকা কেজিতে। এ ছাড়াও সোনালি জাতের মুরগি ৩৭০ থেকে ৩৮০ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি বাজারে দাম বৃদ্ধির কারণে খুচরা বাজারে বাড়তি দামে মুরগি বিক্রি করতে হচ্ছে। ঈদের সময় থেকে মুরগির দাম বাড়িয়েছে। প্রতি কেজি মুরগিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে পাইকারি বাজারে। ফলে আমাদের সেভাবেই বিক্রি করতে হচ্ছে।
মুরগির সাথে সাথে সব ধরনের সবজির দামও বেড়ে গেছে। সেই সাথে বেড়ে গেছে আদা-রসুনের দামও। নিত্যপণ্যের এমন দাম বৃদ্ধিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ক্রেতারা। দ্রব্যমূল্যের সাথে আয় বৃদ্ধি না হওয়ায় বাজার করতে এসে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে তাদের। গতকাল রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, কাঁচা মরিচ ৮০-৯০ টাকা, করলা ৬০-৬৫, ঝিঙা-পটল ও চিচিঙ্গা ৫০-৭০, টমেটো ৪৫-৫০, পেঁপে ৫৫-৬০, গাজর ৮০-১২০ ও কচুর লতি কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। এ ছাড়া লাউ ও চালকুমরা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়, বাঁধাকপি প্রতি পিস ৫০ ও কলার থোর ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে আকারভেদে লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৫০ টাকা। এ ছাড়া কাঁচা কাঁঠাল প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ১৪৫-১৫০ টাকায়।
এ দিকে ঈদের আগে মানভেদে ৩৬-৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া দেশী পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ৪২-৪৬ টাকায়। এক মাস আগে যা বিক্রি হয়েছে ৩০-৩৪ টাকা দরে। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রায় ১২ টাকা। ঈদের আগে ১০০ টাকা ও এক মাস আগে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া দেশী রসুন এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। অন্যদিকে, ঈদের আগে ১৪০ টাকা ও এক মাস আগে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া চায়না রসুন এখন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়।
এ ছাড়া ঈদের আগে ১৬০ টাকায় বিক্রি হওয়া মিয়ানমার থেকে আমদানি করা আদা এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২২০ টাকায়। আর ২৮০ টাকার চায়না আদা বিক্রি হচ্ছে ২৯০ টাকা কেজি দরে।
এ মূল্যবৃদ্ধির ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ক্রেতারা। দোকানে দোকানে দাম নিয়ে চলছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের বাগি¦তণ্ডা। বিশেষ করে ব্রয়লার মুরগি ও ফার্মের ডিমের দাম বাড়ায় নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত ক্রেতারা কষ্টে পড়ে গেছেন। বেশকিছু ক্রেতাকে দাম শুনে খালি হাতে ফিরে যেতে দেখা গেছে।
বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ কম তাই দাম বেশি। আমরা বেশি দামে কিনেছি, তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। দাম এভাবে বাড়ুক আমরা সেটা চাই না। কারণ দাম বাড়ায় বিক্রি কম হচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি পাঙ্গাশ ১৭০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তেলাপিয়া মাছের কেজি হয়েছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা। প্রতি কেজি চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ১০০০ টাকায়। তাজা রুই, কাতলা, মৃগেল বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৬০ টাকা কেজি দরে। দেশী প্রজাতির টেংরা, শিং, গচি ও বোয়াল মাছের কেজি ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।