শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৮ পূর্বাহ্ন

মালয়েশিয়ার স্থিতিশীলতা বিনষ্ট না হওয়াই কাম্য

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
  • ৩২৭ বার

বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ রাষ্ট্রনায়ক মালয়েশিয়ার মাহাথির মোহাম্মদ। তিনিই আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার। ১৯৮১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত মাহাথির বারিসান ন্যাশনাল দলের নেতা এবং দেশটির সরকারপ্রধান হিসেবে এর আধুনিকায়ন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের হাল ধরেন। তার নেতৃত্বে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের মধ্যে মালয়েশিয়া উন্নয়নের এক মডেল হয়ে ওঠে। ২০০৩ সালে তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীকালে তার উত্তরসূরিদের দুর্নীতি ও অদক্ষতায় যখন সংকট ঘনিয়ে ওঠে তখন দেশের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে ২০১৮ সালে মাহাথির নিজ দল থেকে বেরিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে মিলে পাকাতান হারপান জোট গঠন করেন। সেই থেকে তিনি আবারও দেশের সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নেন। ৯২ বছর বয়সে তিনি এ দায়িত্ব নিয়ে বলেছিলেন, দুবছরে সর্বক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন আনোয়ার ইব্রাহিমের অনুকূলে।

নবতিপর এই নেতার অধীনে মালয়েশিয়া আবার শুধু ঘুরে দাঁড়ায়নি, তিনি মুসলিম বিশ্বের এক নির্ভরযোগ্য নেতাও হয়ে উঠেছেন। বর্তমানে পঁচানব্বই বছর বয়সেও তার শরীর-স্বাস্থ্য ভালোই আছে, কর্মদক্ষতাও তেমন হ্রাস পায়নি। ফলে মনে হচ্ছে ঠিক প্রতিশ্রুতি রক্ষার জন্য মাহাথির পদত্যাগ করেননি। তার সম্ভবত আরও সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক লক্ষ্য রয়েছে। ক্ষমতাসীন দল পাকাতান হারপান জোট থেকে বেরিয়ে সম্ভবত দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী আনোয়ার ইব্রাহিমকে ছাড়াই তিনি নতুন জোট গঠন করবেন। ফলে সামনের দিনগুলোতে মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে কিছু ভাঙাগড়া হতে পারে বলে মনে হচ্ছে।

মালয়েশিয়ার বর্তমান সুলতান পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন পর্যন্ত মাহাথির মোহাম্মদকে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের অনুরোধ করেছেন। দেখা যাচ্ছে মাহাথির ২০১৮-তে জোট গঠনকালে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আনোয়ার ইব্রাহিমের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে আগ্রহী নন। বরং বিজয়ী হয়ে তিনি আনোয়ার-পতœী দাতুক সেরি ডা. ওয়ান আজিজাহ ওয়ান ইসমাইলকে উপপ্রধানমন্ত্রী করেছিলেন। ২০১৮-র নির্বাচনী প্রচারে এই নারীর ভূমিকা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফলে অনেক পর্যবেক্ষকই ধারণা করছেন মাহাথিরের উত্তরসূরি হতে পারেন ডা. ওয়ান আজিজাহ।

তবে পরিস্থিতি আরও জটিল রূপ ধারণ করতে পারে যদি মাহাথির-আনোয়ার দ্বন্দ্ব শেষে স্ত্রীর সরকারপ্রধান হওয়ার পথে অন্তরায় সৃষ্টি করে। সে ক্ষেত্রে মাহাথির হয়তো অন্য কোনো নতুন উত্তরসূরির সন্ধান করার সুযোগ পাবেন বলেই পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।

পরিস্থিতি যেদিকেই যাক আমরা মনে করি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর মধ্যে স্থিতিশীল ও ধারাবাহিক রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং উন্নয়নের অর্থনীতিতে সফল দেশটি যেন কোনো দুর্বিপাকে না পড়ে। বাংলাদেশের বিপুল জনশক্তি সেদেশে কর্মরত থাকা ছাড়াও বাণিজ্য ও অর্থনীতির অন্যান্য ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার সঙ্গে আমাদের রয়েছে গভীর সম্পর্ক। সেদিক থেকেও আমরা চাইব দেশটিতে স্থিতিশীলতা অক্ষুণœ থাকুক।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com