ঈদ উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমন্ত্রণে গত সোমবার (১ মে) হোয়াইট হাউজে মুসলিম আমেরিকানদের মিলনমেলা বসেছিল। কংগ্রেস, স্টেট পার্লামেন্ট, সিটি কাউন্সিল থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে নির্বাচিত মুসলিম আমেরিকান ছাড়াও ছিলেন মুসলিম রাষ্ট্রসমূহের রাষ্ট্রদূতসহ শীর্ষ স্থানীয় কর্মকর্তারা।
জর্জিয়া স্টেট সিনেটর শেখ রহমান এবং কানেকটিকাট স্টেট সিনেটর মাসুদুর রহমান ঈদ-উৎসবের পর বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাছে অনুভূতি ব্যক্তকালে বলেন, আমরা অত্যন্ত খুশি যে, মুসলিম বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশার সুযোগ পেলাম। ঈদ আনন্দে সকলেই ছিলেন উদ্ভাসিত। প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এভাবেই নিজেদের মধ্যকার সম্প্রীতির বন্ধন জোরালো হবে। মার্কিন রাজনীতি ও প্রশাসনে আরও বেশি মুসলিমের সম্পৃক্ততা ঘটবে বলে আশা করছি।
সিনেটর শেখ রহমান বলেন, এটি প্রথম ঈদ উদযাপন নয়। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প এসে এটি বন্ধ করেছিলেন। ২০১৭ সালে ডেমক্র্যাটিক পার্টির জাতীয় কমিটিতে একমাত্র মুসলিম সদস্য হিসেবে এই ডিসিতে আমার উদ্যোগে ঈদ-পুনর্মিলনি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আমরা থেমে থাকিনি। এরপর জো বাইডেন হোয়াইট হাউজে ফিরলে আমি তাকে অনুরোধ করেছিলাম পুনরায় তা চালু করা করতে। তিনি অঙ্গীকার করেছিলেন এবং তারই অংশ এই ঈদ-উৎসব।
সিনেটর মাসুদুর রহমান বলেন, আমরা সবসময় আশা করি সর্বস্তরে মুসলিম আমেরিকানদের প্রতিনিধিত্ব ঘটুক। এধরনের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সে পথ সুগম হয় বলে মনে করছি।
সিনেটর মাসুদ উল্লেখ করেন, মুসলিম কমিউনিটিকে জোরালোভাবে ঐক্যবদ্ধ করতে এ অনুষ্ঠানের গুরুত্ব অপরিসীম। সুযোগ হল ৫৬টি মুসলিম রাষ্ট্রের বিশিষ্ট নাগরিকদের কাছাকাছি আসার। সকল কূটনীতিকও আমন্ত্রিত ছিলেন। এটি সমগ্র মুসলিম বিশ্বকে একত্রিত করার সামিল ছিল।
সিনেটর শেখ রহমান বলেন, সুন্দর একটি বাড়ি এবং দামী একটি গাড়ি ক্রয় করেই যেন মুসলিম আমেরিকানরা সন্তুষ্ট না থাকেন। যারা সিটিজেনশিপ নিয়েছেন তাদের পবিত্র দায়িত্ব হচ্ছে ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়ে ব্যালট যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়া। সকলকে মার্কিন ধারায় অংশ নিতে হবে। নীতি-নির্ধারণের বাইরে থাকার মানসিকতা পরিহার করতে হবে। কারণ, এদেশটি সকলের এবং নিজ নিজ ন্যায্য হিস্যার জন্যই রাজনীতি ও প্রশাসনে সম্পৃক্ততার বিকল্প নেই।
সিনেটর মাসুদ উল্লেখ করেন, নীরব থাকলে চলবে না। সরব হতে হবে, কাজ করতে হবে। তাহলেই আমরা নিজের প্রত্যাশার পরিপূরক ভূমিকায় সক্ষম হব। তাই সকলের প্রতি উদাত্ত আহবান রাখছি ঘর থেকে বের হোন। জড়িত হোন সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায়। তাহলেই আমেরিকান স্বপ্ন পূরণের পথে অনেক বাধা দূর হয়ে যাবে।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন সকলকে হোয়াইট হাউজে স্বাগত জানান ঈদ মুবারক বলে। বাইডেন বলেন, এটি হচ্ছে জনগণের ভবন। এটাই সত্য। এটা আপনাদের ভবন। আপনার ভবন।
বাইডেন বলেন, শিক্ষক, ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, বিজ্ঞানী,অ্যাটর্নি, ব্যবসায়ী, কংগ্রেসওম্যান, কংগ্রেসম্যান, স্টেট সিনেটর, স্টেট রিপ্রেজেনটেটিভ, সিটি মেয়র, সিটি কাউন্সিলম্যান থেকে সর্বস্তরে রয়েছেন মুসলিম আমেরিকানরা। আমার প্রশাসনেও রয়েছেন অনেকে। মার্কিন সেনাবাহিনীতেও আপনারা সাহসী ভূমিকা পালন করছেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতেও মুসলমানদের অবদান অনস্বীকার্য। বিদেশি মিশনেও রয়েছেন অনেকে। ইতোমধ্যেই আমি একজন ফেডারেল জজ নিয়োগ করেছি। হোয়াইট হাউজে পাবলিক অ্যাঙ্গেজমেন্ট অফিসে মুসলিম লিঁয়াজো অফিসারের পদ ক্রিয়েট করে ইতোমধ্যেই একজনকে নিয়োগ করেছি।
বাইডেন বিপুল করতালির মধ্যে উল্লেখ করেন, হোয়াইট হাউজে অন্য সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাথে মুসলিম আমেরিকানরাও নিরলসভাবে কাজ করছেন। আমি অভিভূত তাদের কর্মনিষ্ঠা দেখে।