নরসিংদীর মনোহরদীতে ভন্ড পীরের কথা রাখতে খাটের নিচে নাজমা বেগম (৫৬) নামে এক গৃহবধূর লাশ নিয়ে ছয় দিন বসবাস করেছে নিহতের স্বামীসহ তার চার মেয়ে। এলাকাবাসীর মাধ্যমে এমন খবর পেয়ে ঘরের দরজা ভেঙে নিহতের লাশ উদ্ধার করে মনোহরদী থানা পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবাসহ চার মেয়েকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, মনোহরদী বাজার সংলগ্ন পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে সাবেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোক্তার উদ্দীন (৬৮) নিজের বাড়িতে তার স্ত্রী নাজমা ও চার মেয়েসহ দীর্ঘদিন যাবৎ বসবাস করে আসছিল। গত সোমবার ভোরে নাজনা বেগম মারা যান। নাজমা বেগম নাকি মৃত্যুর আগে তার পরিবারের সবাইকে বলে যান, তার পীর বলে গেছেন মৃত্যুর তিন থেকে চার দিন পর তিনি পুনরুজ্জীবিত হবেন। এজন্য যেন তাকে দাফন না করা হয়। নাজমার এমন কথার ভিত্তিতে বিশ্বাসে পরিবারটি তার লাশ বসত ঘরের খাটের নিচে রেখে খুব স্বাভাবিক ভাবেই দিন কাটাচ্ছিলেও প্রতিবেশিদের কেউ মৃত্যুর এমন ঘটনা আঁচ করতে পারছিল না।
পরে লাশ পঁচা দুর্গন্ধ পেয়ে প্রতিবেশীরা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে বাড়িতে হানা দিয়ে দরজা ভেঙে ঘরের খাটের নিচ থেকে নাজমার লাশ উদ্ধার করে। এ সময় মোক্তার উদ্দীন ও তার চার মেয়ে ঘরের ভেতরই অবস্থান করছিলেন।
জানা যায়, মুক্তার উদ্দীনের বাড়ি মনোহরদী উপজেলাধীন অর্জুনচর গ্রামে। মনোহরদী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে জমি কিনে বাড়ি করে তিনি বসবাস করে আসছিলেন।
মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দীন সাংবাদিকদের জানান, পরিবারটি এক পীরের মুরিদ ছিলেন বলে জানা যায়। তারা প্রতিদিন ভোর ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত জিকির করতেন। জিকিররত অবস্থায় নাজমার মৃত্যু ঘটে বলে তারা পুলিশকে জানিয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টার ও পরবর্তী তদন্তে বিস্তারিত জানা যেতে পারে।