টিভি নাটকের আলোচিত অভিনেত্রী তানজিন তিশা। কাজ করেছেন বিজ্ঞাপন, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও মিউজিক ভিডিওতে। বর্তমান ব্যস্ততা ও অন্য অনেক প্রসঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- জাহিদ ভূঁইয়া
গত কয়েক বছরে অভিনয় নিয়ে তানজিন তিশার ভাবনায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। বিষয়টা মানেন?
কেন মানব না? শুরুর দিকে আমি অভিনয় নিয়ে খুব বেশি সিরিয়াস ছিলাম না। কিন্তু যখন থেকে মনেপ্রাণে অভিনয়ের চেষ্টা শুরু করেছি, তখন থেকেই নিজের কাজগুলোর জন্য ভালো সাড়া পেতে শুরু করি।
অসংখ্য নাটকে অভিনয় করছেন। নিজের কাজগুলো নিয়ে আপনি কতটা সন্তুষ্ট?
একজন শিল্পী কখনই তার কাজ নিয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারেন না, সব সময় চান অতীতের চেয়ে ভালো কাজ করতে। আমিও তার ব্যতিক্রম নই। সব সময় নিজের সর্বোচ্চ মেধাটুকু দিতে চাই। এটা সত্যি যে, টিভি পর্দায় নিয়মিত কাজ করেছি। যতটা সম্ভব ভালো গল্পের নাটকে কাজের চেষ্টা করেছি, এখনো করছি। কারণ আমাদের দেশে গল্পনির্ভর নাটকের দর্শক বেশি। বিষয়টা বুঝেছি ইউটিউবে নাটকগুলোর ভিউয়ের পাশাপাশি দর্শকের মতামত থেকে। একজন অভিনয়শিল্পীর কাছে দর্শকের ভালোবাসাই সবচেয়ে বড় সফলতা।
পর্দায় অপূর্ব ও আফরান নিশোর সঙ্গে আপনাকে বেশি দেখা যায়। আপনিও কি তাদের সঙ্গে পর্দা ভাগাভাগি করতে পছন্দ করেন?
দর্শকের পছন্দের কথা মাথায় রেখেই হয়তো নির্মাতারা আমার বিপরীতে তাদের (অপূর্ব ও নিশো) নির্বাচন করেন। তবে আমি যে কোনো অভিনেতার বিপরীতেই কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। নিজস্ব কোনো বাধ্যবাধকতা নেই যে, অমুক অভিনেতার সঙ্গেই অভিনয় করতে হবে। আমি শুধু অভিনয়ের আগে গল্প আর নিজের চরিত্রটিই দেখি। চরিত্র পছন্দ হলেই আমি অভিনয়ে রাজি হই, এ ছাড়া নয়।
গত কয়েক বছরে বিশেষ দিবসে টিভি চ্যানেল খুললেই তানজিন তিশাকে দেখা যায়। এতে অনেকে বিরক্তি প্রকাশ করেন, ঘুরেফিরে ছোটপর্দায় একই মুখ। বিষয়টি কীভাবে দেখেন?
হতে পারে অনেকে বিরক্ত হন। কিন্তু এত কাজ আমি কেন করছি? সেটা আমার ইচ্ছেতে? দর্শকের চাহিদা, চ্যানেলের চাহিদা। এখন অ্যাপের যুগ চলছে। অ্যাপে যারা কনটেন্ট বানাচ্ছেন, তারা এই চেনা মুখগুলো চাইছেন। আসলে কাজ করা হয় দর্শকের চাহিদাতেই।
ধারাবাহিকে নিয়মিত দেখা যায় না। এর কারণ কী?
আমার ক্যারিয়ার গ্রাফটা দেখলেই এর কারণ বুঝতে পারবেন। শুরু থেকেই আমি ধারাবাহিকে অভিনয় এড়িয়ে চলেছি। তার পরও বেশ কয়েকটি কাজ করেছি। সেগুলো করতে গিয়ে বুঝেছি, ধারাবাহিকে ‘ধারাবাহিকতা’ ধরে রাখাটা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। আর এখন এক ঘণ্টার নাটকের জন্য বেশি ব্যস্ত হওয়ায় ধারাবাহিকের জন্য যে সময়টা দেওয়া প্রয়োজন, তা দিতে পারব না বলেই ঢালাওভাবে অভিনয় করছি না।
এর আগে বেশ কয়েকবার চলচ্চিত্রে অভিনয় করবেন বলে জানিয়েছিলেন। এ বছর কী বড়পর্দায় দেখা যাবে?
প্রতিটি শিল্পীরই স্বপ্ন থাকে চলচ্চিত্রে অভিনয় করার। আমারও আছে। তবে হুট করেই নয়। কোনো একটা গল্প পড়ে মনে হতে হবেÑ ‘দিস ইজ মাইলস্টোন, আই ক্যান ডু দিস প্রজেক্ট।’ সবকিছু মিলিয়ে যদি মনে হয় যে ভালো প্রডাকশন, যেটার যোগ্য আমি বা যে কাজটা আমার জন্য সেটা অবশ্যই করব। সেটা এ বছরই হবে কিনা; এখনই বলতে পারছি না।
আগামী ১৭ মার্চ গাজীপুরের রাজবাড়ি মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করবেন। এ নিয়ে কিছু বলুন…
ছোটবেলায় নাচ আমি শিখেছি। তাই নাচের প্রতি অন্যরকম ভালোলাগা রয়েছে। নাচ আমার ভালোবাসার, পছন্দের। সত্যি বলতে কীÑ এখন অভিনয়ে এত বেশি সময় দিতে হয় যে, কোনো অনুষ্ঠানে নাচ করার সুযোগই হয়ে ওঠে না। কিন্তু যেহেতু ১৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে, তাই সময় বের করে এই অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করব। ইভান শাহরিয়ার সোহাগের নির্দেশনায় এতে আমি, সাফা কবির ও ৫০ জন নৃত্যশিল্পী অংশগ্রহণ করব।