‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক হয়েছে অভিনেতা আফরান নিশোর। সিনেমাতে তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন তমা মির্জা। রায়হান রাফি পরিচালিত এই চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছে ২৯ জুন। মুক্তির পর সিনেমাটি দর্শক মহলে বেশ সাড়া ফেলেছে। অনেকেই ভূয়সী প্রশংসা করছেন। তবে কিছু দৃশ্য ও সংলাপ নিয়ে ক্ষোভও ঝাড়লেন দর্শক।
সিনেমাটির প্রতিটি চরিত্রেরই প্রাণ কেন্দ্র ছিল গল্প। প্রেম, রহস্য, বাস্তবতা আর জীবনের সত্য ঘটনাই ফুটে উঠেছে এতে। সোজা বাংলায় পুরোদস্তুর বাণিজ্যিক সিনেমা ‘সুড়ঙ্গ’। প্রেম, বিচ্ছেদ, প্রতিশোধ, হালকা কমিক রিলিফ, রোমান্টিক গানের পাশাপাশি আইটেম গান, নিম্নবিত্ত সমাজ ব্যবস্থা ও দৃষ্টিভঙ্গি, ব্যভিচার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবকিছুই আছে। প্রথম হাফে রোমান্টিক গল্প মনে হলেও দ্বিতীয় হাফে যেতে যেতে সুড়ঙ্গ একটি পরিপূর্ণ থ্রিলার ও সাসপেন্স সিনেমা হয়ে উঠে।
সিনেমাটি দেখে নিজের মত প্রকাশ করে এক নারী দর্শক বলেন, ‘বাচ্চাদের সঙ্গে, পরিবারের সঙ্গে দেখার মত সিনেমা এটি না। লজ্জায় শেষ।’
অন্য এক নারী বলেন, ‘এটা কোন সিনেমাই হতে পারে না। পুরোটাই নেগেটিভ, নেগেটিভ, নেগেটিভ।’
আরেক দর্শক বলেন, ‘সিনেমা দেখে একটা ভালো অনুভুতি নিয়ে বের হওয়ার কথা, অথচ খুব অস্বস্তির মধ্যে আছি।’
অপর এক দর্শক বলেন, ‘আমি আমার বাচ্চাদের নিয়ে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলাম। ১৮+ জানলে হয়তো বাচ্চাদের নিতাম না। প্রতি ঈদেই বাংলা কোন না কোন সিনেমা দেখা হয়। ১৮+ কিছু দৃশ্য ছাড়া সিনেমাটা দারুন বানিয়েছে। নিশোর প্রশংসা করতেই হয়। তমা মির্জা চরিত্রকে পুরো ধারণ করতে পেরেছে। শহীদুজ্জামান সেলিমের অভিনয় নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই। মেকিং খুবই ভালো ছিল।’
অন্য এ দর্শক বলেন, ‘পরিচালক সাহেবের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আশা করি সামনের দিনগুলোতে আরও সচেতন হবেন।’
কেউ কেউ আবার এসব বক্তব্যকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত হিসেবে আখ্যা দিচ্ছেন। তাদের দাবি হলিউড, বলিউড সিনেমায় এমন দৃশ্য দেখলে সমস্যা হয় না কিন্তু বাংলাদেশের সিনেমাতে থাকলেই কিছু মানুষ এমন মন্তব্য করেন।
এদিকে, দর্শকদের সমর্থনে নিজের ফেসবুকে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন নির্মাতা বুলবুল বিশ্বাস। এক অংশে তিনি লিখেছেন, ‘একটা সিনেমা দেখে দর্শকের ভালো লাগতেও পারে, নাও লাগতে পারে। তার নিজের টাকা দিয়ে সিনেমা দেখে মতামত জানানোর পূর্ণ অধিকার সে রাখে। কিন্তু কোনভাবে সেই মতামত আমাদের মতের সাথে মিল না হলে তাকে আমরা জনতার কাঠগড়ায় তুলে তুলোধুনো করে ছাড়বো-এই মনোভাব থেকে আমাদের বের হবার সময় এখন এসেছে।’
তিনি আরও লেখেন, ‘নির্মাতা হিসেবে একটি কথা বলতে চাই, “দর্শকরাই কিন্তু নির্মাতাদের ঈশ্বর, দর্শকদের তুষ্ট করতেই সিনেমার এই বিপণন”।’
উল্লেখ্য, আফরান নিশো ও তমা মির্জা জুটির প্রথম সিনেমা এটি। প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যেও দর্শকরা প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে সিনেমাটি দেখছেন। দর্শকদের ভিড় ও চাপের জন্য শো বাড়ানো হয়েছে মাল্টিপ্লেক্সগুলোতে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে ‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমার অধিকাংশ শো হাউসফুল যাচ্ছে।
এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, নির্মাতা রায়হান রাফীর হাত ধরে অভিনেতা আরফান নিশো ‘সুড়ঙ্গে’র মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেকেই সফলতার ছাপ রেখেছেন। এখানেও তিনি তার দক্ষ অভিনয়ে একেবারে দর্শকের হৃদয় ছুঁয়েছেন।