মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:০৪ অপরাহ্ন

রোকেয়া হলের ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতন, হাসপাতালে যেতে বাধা

এনবিডি নিউজ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৪ জুলাই, ২০২৩
  • ৮৭ বার
ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রোকেয়া হলের আয়শা সিদ্দিকা রুপা নামে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে কতিপয় শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। নির্যাতন শেষে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় হল প্রশাসন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন রুপা সহপাঠীরা। গতকাল রোববার দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের ৭ মার্চ ভবনের ১১২১ নম্বর রুমে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ১নং সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকা বিনতে হোসেনের নির্দেশে তার কতিপয় অনুসারী রুপাকে রুম থেকে নেমে যেতে বলে। রুম থেকে নেমে যেতে অস্বীকৃতি জানালে এক পর্যায়ে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করে অভিযুক্তরা।

রাত তিনটায় মারধরের পর রুপা অসুস্থ হয়ে পড়ে ও বেশ কয়েকবার বমি করে। তবুও হল প্রশাসন রুপাকে হলের বাইরে হাসপাতালে নিয়ে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। তখন রুপাকে আলাদা একটি রুমে নিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখে বলে অভিযোগ করেছে তার সহপাঠীরা।

অভিযুক্ত আতিকা বিনতে হোসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ১নং সাংগঠনিক সম্পাদক ও হল ছাত্রলীগের সভাপতি। বাকি অভিযুক্তরা হলো– হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সামিহা মাহুব ঐশী, সাংগঠনিক সম্পাদক বিপর্ণা রায় এবং ছাত্রলীগ নেত্রী ফারজানা পারভীন।

মারধরের পর তাকে টেনেহিঁচড়ে রুম থেকে বের করে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে তার কাপড়চোপড় ও জিনিসপত্র বাইরে রাখা হয়েছে।

আতিকা বিনতে হোসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের ‘মাইম্যান’ হিসেবে পরিচিত। এদিকে আয়েশা সিদ্দিকা রুপা হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকা রূপা বলেন, ‘আমি রোকেয়া হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং ক্যান্ডিডেটও। ১১২১ নং রুম থেকে আতিকা আপুর ৮-১০ জন মেয়ে জিনিসপত্র আগেই ফেলে দিছে। ওরা রুমের সামনে সাড়ে ১০টা থেকে অবস্থান করছে। এখন পর্যন্তও তারা এখানে আছে। ওরা ৮-১০ জন মিলে অমানুষের মতো আমাকে রুম থেকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে গেছে। আমি প্রচণ্ডভাবে ইনসিকিউরড। হাতে ব্যথা ও কথা বলতে পারতেছি না। আমি এখনো রুমের বাইরে বসে আছি।’

জানতে চাইলে আতিকা বিনতে হোসেন বলেন, ‘আমি আসলে কিছু জানি না। আমাকে এক সাংবাদিক ফোন দিয়েছিল। ওর কাছ থেকেই আমি জানতে পারছি। আমি প্রভোস্ট ম্যামকে অলরেডি ফোন দিয়েছি। ম্যাম আসলে এটা তিনি সমাধান করবে। আর আমি তো এখন সেন্ট্রালে মুভ করতেছি। হলের বিষয়গুলো দেখার সুযোগ আমার নেই। এজন্যই আমি প্রভোস্ট ম্যাম ও হাউজ টিউটরকে ফোন দিয়েছি। ওনারা আসতেছে। আর সামিহা আমার দিকে রাজনীতি করে ও রূপা হলো সেক্রেটারি প্যানেলের।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে রোকেয়া হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জিনাত হুদাকে একাধিক কল ও মেসেজ পাঠানো হলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে তানভীর হাসান সৈকত বলেন, ‘আমি বিষয়টা শুনছি। মেয়েটা অসুস্থ হয়ে গেছে। কথা বলতে পারতেছে না। ওর সঙ্গে কানেক্ট করতে পারতেছি না। এটা মেয়েকে রাতে এ রকম নির্যাতন করা হয়েছে। এই সংস্কৃতিতে আমরা বিশ্বাস করি না। একাডেমিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com