সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

ব্যাংক থেকে গ্রাহকের কোনো তথ্য সরাসরি নেয়া যাবে না

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৯
  • ৩৪২ বার

ব্যাংক থেকে গ্রাহকের কোনো তথ্য সরাসরি নেয়া যাবে না। গ্রাহকের কোনো তথ্য পেতে হলে আদালতের অনুমোদন নিতে হবে অথবা বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের (বিএফআইইউ) অনুমোদন নিতে হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে ক্যাসিনোসহ দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে বিভিন্ন গ্রাহকের তথ্য নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অনুরোধে বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের তথ্য সংগ্রহ করছে।

এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট থেকে ব্যাংকগুলোকে চিঠি পাঠানো হয়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম হওয়ার অভিযোগ উঠেছে ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে। দেশের প্রথম প্রজন্মের একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নয়া দিগন্তকে জানান, আদালত ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বাইরেও বিভিন্ন দিক থেকে বিভিন্ন গ্রাহকের তথ্য চাওয়া হচ্ছে। তবে ব্যাংক থেকে কেবল আদালতের নির্দেশনা বা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার বাইরে আর কাউকে তথ্য দেয়া হচ্ছে না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের বিষয়ে ব্যাংক থেকে সতর্ক হতে বলা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট গ্রাহক যাতে ব্যাংক থেকে অর্থ উত্তোলন করে নিতে না পারে সে জন্য ব্যাংক কর্মকর্তাকে সতর্ক করে দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের বিষয়ে আদালত বা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার অপেক্ষায় থাকা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আইনেরও তেমন বাধ্যবাধকতা নেই। কারণ কোনো গ্রাহকের লেনদেনে সন্দেহ হলে ওই গ্রাহকের বিষয়ে সতর্কতার জন্য তার লেনদেন সীমিত করতে পারে ব্যাংকগুলো।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের প্রধান আবু হেনা মোহা: রাজি হাসান বৃহস্পতিবার নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, গ্রাহকের তথ্য হলো গোপনীয় বিষয়। এ গোপনীয় বিষয় ব্যাংক প্রকাশ করতে পারে না। কেবল আদালত থেকে কেউ অনুমোদন নিলে ওই সংস্থার কাছে গ্রাহকের তথ্য সরবরাহ করা যাবে। একই সাথে মানি লন্ডারিংয়ের কোনো বিষয় হলে বা মামলা তদন্তাধীন হলে অথবা সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন হলে ওই ক্ষেত্রে বিএফআইইউর অনুমোদন নিয়ে গ্রাহকের তথ্য চাওয়া যায়। আর সে ক্ষেত্রে ব্যাংকও সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের তথ্য সরবরাহ করতে বাধ্য থাকে।

এ দিকে সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন, জালজালিয়াতির সাথে জড়িতদের তথ্য সরাসরি ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে সংগ্রহ করার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সাথে এ বিষয়ে আইন সংশোধনের প্রস্তাবও নাকচ করে দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন, বিভিন্ন জালিয়াতির সাথে জড়িতদের তথ্য দ্রুত পেতে আইনি বিধান করার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধবিষয়ক কেন্দ্রীয় টাস্কফোর্সের কাছে প্রস্তাব দিয়েছিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এর পক্ষে যুুক্তি ছিল, আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে অপরাধীদের তথ্য নিতে দেরি হয়ে যায়। এ কারণেই আইনি সংস্কার প্রয়োজন।

তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বলা হয় ব্যাংক হিসাবে আমানতকারীদের তথ্য বিশ্বব্যাপীই অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে সংরক্ষণ করা হয়। বাংলাদেশেও এটি করা হয়। হিসাবে থাকা টাকা সরিয়ে ফেলার সুযোগ খুব কম। এ ছাড়া টাকা তুলে নেয়া হলেও সব তথ্য ব্যাংকের কাছেই থাকে। এ ছাড়া বিএফআইইউ থেকে অনুমোদন চাওয়া হলে তা সাথে সাথে দেয়া হচ্ছে। ফলে এই ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। এ ছাড়া বিএফআইইউ কোনো গ্রাহকের ব্যাংক হিসাব প্রথমে এক মাসের জন্য স্থগিত করতে পারে। পরবর্তীতে এক মাস করে ছয় মাস পর্যন্ত তা বাড়াতে পারে। এ ক্ষেত্রে কোনো গ্রাহকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সমস্যা হয় না। এর বাইরে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আদালতের অনুমোদন নিয়ে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের হিসাব স্থায়ীভাবে স্থগিত করতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com