স্পেনের বিশ্বকাপ জয়ের পর ফুটবলার জেনি হার্মোসোকে চুমু দিয়ে চারদিক থেকেই সমালোচনার তিরে বিদ্ধ হচ্ছেন দেশটির ফুটবল বোর্ডের প্রধান লুইস রুবিয়ালস। এবার ছেলের পক্ষে কথা বললেন রুবিয়ালসের মা অ্যাঞ্জেলেস বেজার। হার্মোসোকে সত্য বলতে অনুরোধ জানিয়ে অনশনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
রুবিয়ালস নিষ্ঠুরতার শিকার বলে দাবি করছেন তার মা। এজন্য হতাশ হয়ে পড়ছেন তিনি। রুবিয়ালসের দাবির পুনরাবৃত্তি করে বেজারও বলছেন, চুমুতে সম্মতি ছিল উভয়পক্ষের। চুমু নিয়ে হার্মোসো প্রথমদিকে যেই বক্তব্য দিয়েছেন সেটিতে স্থিরও থাকতে অনুরোধ করেছেন বেজার।
তিনি বলেছেন, ‘তারা আমার ছেলের সঙ্গে এমন কিছু করেছে যার প্রাপ্য সে নয়।’ বেজারের দাবি তার ছেলে ‘কারো ক্ষতি করতে অক্ষম’ এবং আশা করছেন তার ছেলে এই ঘটনায় মুক্তি পাবে।
রুবিয়ালস বলেছিলেন, ‘কোনো কিছু উদযাপন করতে দুই বন্ধুর মধ্যে চুমুর মতো’ ছিল ওটা। যারা এটি ভিন্নভাবে নিচ্ছে তাদেরকে ‘নির্বোধ ও ইতর লোক’ বলেও আখ্যা দিয়েছিলেন তিনি।
এরপর জল অনেকদূর গড়িয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন স্পেনের সমতা বিষয়ক মন্ত্রী ও ক্রীড়ামন্ত্রী। দেশটির প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেস বলেছেন, ‘ক্ষমা চাওয়াই এক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়।’ গত সোমবার ক্ষমা চান রুবিয়ালস। তিনি বলেন, ‘আমি স্বীকার করছি আমি সম্পূর্ণ অন্যায় করেছি। (বিশ্বকাপ জয়ের) উত্তেজনার কারণে হয়েছে, সেখানে কোনো বাজে উদ্দেশ্য ছিল না। সে সময় এটিকে আমরা স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছিলাম কিন্তু বাইরে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। আমি ক্ষমা চাইছি, শিক্ষা নিয়েছি এবং বুঝেছি যে আপনি একজন প্রেসিডেন্ট, আপনাকে আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে।’
বিষয়টি নিয়ে পরে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিলেন হার্মোসো। পেশাদার নারী ফুটবলারদের সংগঠন ফুটপ্রো ইউনিয়ন ও নিজের এজেন্সির মাধ্যমে যৌথ বিবৃতিতে নিজের বক্তব্য স্পষ্ট করেন হার্মোসো।
তিনি বলেছেন, ‘এই ধরনের ঘটনায় যেন কেউ কখনোই শাস্তি না পেয়ে পার পায় এবং এই ধরনের অগ্রহণযোগ্য আচরণ থেকে নারী ফুটবলারদের রক্ষা করতে তাদের শাস্তি দেওয়া হয় ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’
পরে রুবিয়ালসের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কার্যক্রমে পদক্ষেপ নেয় ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থা ফিফা। যদিও পদ না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন রুবিয়ালস। তবে তিনি পদে থাকলে জাতীয় দলের হয়ে না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দেশটির উল্লেখযোগ্য প্রায় সব নারী ফুটবলার।