নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ যারা করে সবাই ভালো না। মুক্তিযুদ্ধ করে সবাই ভালো কাজ করেছে তা নয়। মুক্তিযুদ্ধের পর যারা লুট করেছে তারা আসল মুক্তিযোদ্ধা না। একসময় আইসক্রিম বিক্রি করত রাস্তার ধারে, এখন হাজার কোটি টাকার মালিক এমন অনেক লোক আছে নারায়ণগঞ্জে। ওরাও রাজাকারের মতোই।’
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের কালিরবাজারে শিল্পকলা একাডেমিতে শ্রমিকলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা আমাদের বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ। আমার ভুলত্রুটি থাকতে পারে, আমাদের বদলে দিন কিন্তু শেখ হাসিনাকে রাখুন। তরুণ প্রজন্মকে জায়গা ছেড়ে দিতে হবে। আগামী দিনে রাজনীতি রাজপথে হবে না, বুদ্ধি দিয়ে হবে।’
‘বিএনপিকে বলতে চাই, আপনারা কোনো ফ্যাক্টর না। আপনারা ব্যবহৃত হচ্ছেন। নারায়ণগঞ্জকে অস্থিতিশীল করবেন না। আমরা ক্ষমতায়, কাউকে টোকা দেইনি। আপনারা এসেই আমাদের সুইটসহ অনেককে মেরেছেন। আমার বাড়িতে হামলা করেছেন। সিদ্ধিরগঞ্জে আমাদের নয়জন লোককে মেরেছেন। আমরা কিন্তু বিএনপির একটা কর্মীকে থাপ্পরও দেইনি। যে ভুল তারা করেছে আমরা করব না।’
তিনি আরো বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে ভালো লোকরা যখন ছিল তখন সহঅবস্থান ছিল। এখন খুনীরা এসে পড়েছে। বয়সে আমার শাশুড়ির বয়সী। রাজনীতিটাকে নষ্ট করবেন না। পুলিশ ধরে না দেখে ভাববেন না আপনারা কোথায় আছেন জানি না। বাড়িঘর কই সবই জানি।’
তিনি বলেন, ‘মা-বোনদের বিবস্ত্র করে ধর্ষণ করা হয়েছে। এগুলো গল্প নয়। এগুলো বাংলাদেশের ইতিহাস। ত্রিশ লাখ লোককে মেরে ফেলা হলো। আমি আশ্চর্য হই। পৃথিবীর এমন কোনো রাষ্ট্র নেই যেখানে স্বাধীনতাবিরোধীরা রাজনীতি করার সুযোগ পায়। সেই লোকগুলো মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ক্ষমতায় এসে পড়ে মোশতাক ও জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে।’
শামীম ওসমান বলেন, ‘পাকিস্তানের সবচেয়ে নামি পত্রিকা দ্যা ডনে বলা হয়েছিল, রিটার্ন অব দ্যা পাক এরা। ছবিটি জিয়াউর রহমানের। অর্থাৎ বাংলাদেশে আবারো পাকিস্তানি শক্তির প্রত্যাবর্তন। ওরা এখনো ষড়যন্ত্র করছে। এবারের ষড়যন্ত্র নির্বাচন নিয়ে হচ্ছে না। শেখ হাসিনা সেদিন বলেছেন, আমাদের উন্নয়ন করাটা কি অপরাধ হয়ে গেছে?’
শামীম ওসমান আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। বিএনপির আমলে কখন বিদ্যুৎ আসছিল সেটা জিজ্ঞেস করতাম। দিনে দুই ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকলেও অবাক হয়ে যেতাম। আজ পারমাণবিক চু্ল্লিতে আমরা ৩৩তম। আর এরা চায় বাংলাদেশকে আবারো পেছনের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য।’
‘আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যার পর রাজনীতিতে এসেছিলাম বিচার চাইতে। সেই বিচার হলো। আপাকে বলেছিলাম, আমাদের ছেড়ে দেন। রাজনীতিতে অনেক ধরনের লোক এসে গেছে। এখন আর ভালো লাগে না। শেখ হাসিনা আমাদের নেত্রী না, মায়ের মতো। তিনি বললেন, তোমাদের দায়িত্ব শেষ কিন্তু আমার না। আমি আমার বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে চাই।’