রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:৪৮ অপরাহ্ন

গাজায় জাতিসংঘের ত্রাণ সরবরাহ স্থগিত, ‘ক্ষুধামৃত্যু আসন্ন’

বিডি ডেইলি অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৩
  • ৪৪ বার

গাজায় জাতিসংঘের ত্রাণ বিতরণ আবারও স্থগিত হয়ে গেছে। এতে ক্ষুধার্ত ও গৃহহীন হাজার হাজার ফিলিস্তিনির দুর্দশা আরও বেড়ে যাবে। অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অবিরাম হামলার কারণে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা ও জ্বালানি সংকটের কারণে আজ শুক্রবার আবারও জাতিসংঘের ত্রাণ কর্মসূচি স্থগিত হয়েছে।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিকে (ডব্লিউএফপি) উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, খাদ্য সরবরাহের অভাবে বেসামরিক নাগরিকদের ‘ক্ষুধামৃত্যুর’ মুখোমুখি হওয়ার সমূহ আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ফিলিস্তিনের সংবাদ সংস্থা ওয়াফা বলছে, গাজা উপত্যকা ও মিসরের মধ্যবর্তী রাফাহ সীমান্তের কাছে ইসরায়েলি হামলায় বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন।

আল জাজিরা টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের হামলায় নয় জন নিহত হয়েছেন। হামলার বিষয়ে ইসরায়েলের তরফ থেকে তাৎক্ষণিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি। রয়টার্সও এ তথ্য যাচাই করতে পারেনি।

গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে আল শিফা হাসপাতালে হামাসের ব্যবহৃত সুড়ঙ্গের সন্ধান মিলেছে বলে দাবি করছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। রোগী ও বাস্তুচ্যুত মানুষে ভরা হাসপাতাল এখন বিশ্বে উদ্বেগের কেন্দ্রবিন্দু।

ইসরায়েলের দাবি, রোগীসহ আশ্রয় নেওয়া বেসামরিক মানুষকে মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে হামাস হাসপাতালের নিচের সুড়ঙ্গে অস্ত্র ও গোলাবারুদ মজুত করে এবং জিম্মিদের লুকিয়ে রেখেছে। যদিও হামাস বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

হামাস–ইসরায়েল যুদ্ধ সপ্তম সপ্তাহে গড়িয়েছে। ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত সাড়ে ১১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যার এক তৃতীয়াংশের বেশি শিশু। আন্তর্জাতিক মহল যুদ্ধবিরতি বা অন্তত মানবিক বিরতির জন্য আহ্বান জানালেও বিরতি কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

গত ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধাদের ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর থেকে এ সংঘাত শুরু হয়। এ হামলায় ১২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে ও ২৪০ নাগরিককে জিম্মি করা হয়েছে বলে ইসরায়েলের দাবি।

জাতিসংঘ বলছে, খাদ্য সরবরাহের অভাবে বেসামরিক নাগরিকদের তাৎক্ষণিক দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।জাতিসংঘ বলছে, খাদ্য সরবরাহের অভাবে বেসামরিক নাগরিকদের তাৎক্ষণিক দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ছবি: এএফপিএ হামলার জবাবে গাজায় অবিরত বোমা হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল সেনা। স্থল ও বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ১১ হাজার ৫০০ এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে অন্তত ৪ হাজার ৭০০ জনই শিশু।

হামাস গোষ্ঠীকে নির্মূল করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ইসরায়েল। মানবিক সহায়তা সংস্থাগুলো বলছে, লাখ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন এবং মধ্যপ্রাচ্যে মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে।

জাতিসংঘ বলছে, জ্বালানি সংকট ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কারণে আজ শুক্রবার ত্রাণ সহায়তা বন্ধ রয়েছে। জ্বালানির অভাবে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো গতকাল বৃহস্পতিবারও গাজায় কোনো ত্রাণবাহী ট্রাক পৌঁছায়নি।

এক বিবৃতিতে ডব্লিউএফপির নির্বাহী পরিচালক সিন্ডি ম্যাককেইন বলেন, পুরো জনগোষ্ঠীর জন্য খাদ্য সহায়তার চরম প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। কিন্তু গাজায় খাবার ও পানি সরবরাহ এখন পুরোপুরি বন্ধ। প্রয়োজনের সামান্য এক অংশ সীমান্ত দিয়ে আসছে।

ম্যাককেইন বলেন, ‘আসন্ন শীত, অনিরাপদ ও ঘনবসতিপূর্ণ আশ্রয়কেন্দ্র এবং পরিষ্কার পানির অভাবের মধ্যে বেসামরিক নাগরিকদের তাৎক্ষণিক ক্ষুধামৃত্যুর মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

গাজার উত্তরাঞ্চলে হামাস গোষ্ঠী প্রায় নির্মূল হওয়ার পথে রয়েছে বলের ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর প্রধান দাবি করেছেন। হামাসের কার্যক্রম উপকূলীয় অঞ্চলের অন্যান্য অংশে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

হামাস গাজাবাসীকে দক্ষিণাঞ্চলে সরে যেতে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ইসরায়েল। যদিও হামাস তা অস্বীকার করেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com