শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:৩৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
নির্বাচন একটি অবধারিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য জানালেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা : নির্বাচনের ৫ দিন আগেই মাঠে নামবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সংবিধানে ‘আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনর্বহাল করা হবে: সালাহউদ্দিন আহমদ জামায়াতসহ আরও ১২ দলের সঙ্গে ইসির সংলাপ সোমবার গণতান্ত্রিক উত্তরণে বাংলাদেশকে সমর্থন ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য উপদেষ্টার হুশিয়ারিতেও দাম কমেনি পেঁয়াজের পি এস মাহসুদ উদ্বোধন: পর্যটনে যুক্ত হলো শতবর্ষী প্যাডেল স্টিমার রাজনীতিতে ভোটের হাওয়া, স্বস্তির আশা অর্থনীতিতে বিবিসিকে শেখ হাসিনা: আমি মানবতাবিরোধী অপরাধ করিনি সন্তানদের প্রকৃত শিক্ষায় গড়ে তুলতে হবে: গণশিক্ষা উপদেষ্টাvvvvvvvvvv

টিভিতে ক্লাসের সম্প্রচার নিয়ে অভিভাবকদের অসন্তোষ

বিডি ডেইলি অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৪ এপ্রিল, ২০২০
  • ৩৯৪ বার

স্কুল কলেজ ছুটির সময়ে মাধ্যমিক পর্যায়ের ক্লাস সংসদ টিভিতে সম্প্রচারের উদ্যোগ নিয়ে নানা জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। ক্লাস রেকর্ডিয়ের দক্ষ টেকনিশিয়ানের অভাবে মানসম্পন্ন ক্লাস পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। ফলে টিভিতে এই ক্লাসের প্রতি মনোযোগীও হতে পারছে না অনেকে। অভিভাবকদের মধ্যেও শুরু থেকেও এই ক্লাসের সময় এবং মান নিয়ে অসন্তোষ ছিল। ফলে সরকারের একটি ভালো উদ্যোগও এখন ব্যর্থ হতে চলেছে।

অন্য দিকে প্রাথমিক স্কুলের ক্লাসও একইভাবে সম্প্রচারের উদ্যোগ নেয়া হলেও এখানে ভালো শিক্ষকের অভাবে মানসম্পন্ন ক্লাসের ভিডিও ক্লিপ পাচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর ডিপিই। ফলে এই ক্লাসের মান নিয়েও শুরু থেকেই দোটানায় পড়েছে ডিপিই।

এ দিকে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধে গত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হয়েছে। তবে এই ছুটি আগামী রোজার ঈদ পর্যন্ত বাড়ানোর একটি কথাও শোনা যাচ্ছে। এ সময় শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ধারাবাহিকতা রাখতে সংসদ টেলিভিশনের মাধ্যমে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর পাঠদান শুরু করা হলেও ত্রুটিপূর্ণ ক্লাস কার্যক্রম হওয়ায় তা শিক্ষার্থীদের কাছে আনন্দদায়ক হয়ে উঠছে না। আবার কোনো কোনো শিক্ষার্থী ক্লাস করে কিছুই বুঝতে পারছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ত্রুটিযুক্ত সংক্ষিপ্ত ক্লাসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শেখানো সম্ভব নয় বলে মনে করেন শিক্ষকরা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রথম ধাপে গত ২৯ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণীর ক্লাস রুটিন প্রকাশ করা হয়। এরপর গত বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় ধাপে আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত সংসদ টেলিভিশনে পাঠদান সম্প্রচারের রুটিন প্রকাশ করা হয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) থেকে জানা গেছে, করোনা আতঙ্কের কারণে পাঠদান কার্যক্রমের জন্য শিক্ষক, টেকনিশিয়ান ও ক্যামেরাপারসন পাওয়া যাচ্ছে না। পাওয়া গেলেও টাইমিং করানো যাচ্ছে না। এ অবস্থায় রুটিন অনুসারে বিষয়ভিত্তিক মিল রেখে ক্লাস প্রচার করা হচ্ছে না। আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি ছুটি ঘোষণা করায় আপাতত সে পর্যন্ত ক্লাসগুলো রেকর্ডিং করা হয়েছে। তবে কোন ক্লাসের কোন বিষয়ে রেকর্ডিং হয়েছে তা জানা যায়নি। যদিও করোনা পরিস্থিতির কারণে শুরু থেকেই রুটিন অনুযায়ী ক্লাস প্রচার করতে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক না পাওয়ায় এবং টেকনিশিয়ানের অভাবে এক বিষয়ের স্থলে অন্য বিষয়ের ক্লাস নিতে হচ্ছে। দ্বিতীয় দফায় এটি থাকবে না বলে সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন।

রাজধানীর একাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক জানান, টিভিতে প্রচারিত ক্লাসে কয়েকটি বড় সমস্যা রয়েছে। তার মধ্যে প্রথমটি হলো সাউন্ড। যারা ইউটিউব বা লাইভে ক্লাস শোনেন তাদের শব্দগত সমস্যায় বেশি পড়তে হচ্ছে। আলাদা সাউন্ডবক্স লাগিয়েও শোনা যাচ্ছে না। দ্বিতীয়টি হলো ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক এবং সাদা বোর্ড ব্যবহার করায় অনেক বিষয় বোঝা যায় না। বিশেষ করে বিজ্ঞান, গণিত ও ইংরেজির বিষয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে। সূত্রগুলো যখন বোঝানো হয় তখন এক দিকে সাউন্ডের সমস্যা অন্য দিকে সাদা বোর্ডের সমস্যা।
অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু নয়া দিগন্তকে জানান, টিভিতে ক্লাস করার মতো সার্বিক পরিস্থিতি আমাদের দেশে নেই। অনেকের ঘরে টিভি নেই। আবার সংসদ টিভি ডিশ লাইন ছাড়া দেখা যায় না। এই সুবিধা দেশের সব এলাকায় নেই। গ্রামের শিক্ষার্থীরা তো বিদ্যুৎই পাচ্ছে না। তারা টিভি দেখবে কিভাবে ?

অনেক শিক্ষার্থী জানায়, সংসদ টেলিভিশনের মাধ্যমে ক্লাসগুলোতে বিস্তারিত আলোচনা করা হয় না। ফলে ভালোভাবে বোঝানো হয় না। যার জন্য বাসার কাজ (হোমওয়ার্ক) যা দিচ্ছে তা সম্পন্ন করা কঠিন হয়ে পড়ছে। যেহেতু বাসার কাজের ওপর ক্লাসে ধারাবাহিক মূল্যায়ন করা হবে তাই তারা দুশ্চিন্তায় পড়েছে বলে অভিযোগ করে।

ত্রুটিপূর্ণ অসমাপ্ত ক্লাসের মাধ্যমে পাঠদান শিক্ষার্থীদের কোনো উপকারে আসবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম রনি। তিনি বলেন, সংসদ টেলিভিশনে যেসব ক্লাস করানো হচ্ছে তা দিয়ে সিলেবাস শেষ করা গেলেও শিক্ষার্থীদের কিছু শেখানো সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, অদক্ষ শিক্ষকদের মাধ্যমে টেলিভিশনে ক্লাস নেয়া হচ্ছে, তারা বিষয়ভিত্তিক বিস্তারিত আলোচনা করতে না পারায় শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারছে না। যেসব হোমওয়ার্ক দেয়া হচ্ছে তাও করতে পারছে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মো: গোলাম ফারুক চৌধুরী জানান, টেলিভিশনে শ্রেণী পাঠদানে কিছু সমস্যা রয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে শিক্ষক, টেকনিশিয়ান ও কর্মকর্তারা আসতে চাচ্ছেন না বলেই এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানে কাজ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ক্লাসগুলো আরো প্রাণবন্ত করে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। মনোযোগী হয়ে প্রতিদিন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এসব ক্লাস দেখতে হবে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য টিভিতে ক্লাস করা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। গত সপ্তাহে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) ওয়েবসাইটে শিক্ষকদেরকে শ্রেণী পাঠের ভিডিও ধারণ কার্যক্রমে যুক্ত হতে নিবন্ধন করতে বলা হয়। সেখানে শতাধিক শিক্ষক নাম নিবন্ধন করলেও ৪০ জন শিক্ষককে নির্বাচন করে ডিপিই। নির্বাচিতদের কাছে রেকর্ডিং করা ভিডিও চাওয়া হলে শিক্ষকরা যেসব ভিডিও পাঠিয়েছেন তা এডিট করে টেলিভিশনে সম্প্রচার করার মতো নয়। শিক্ষকদের দক্ষতা না থাকায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে প্রাথমিকের শ্রেণী পাঠ কার্যক্রম টেলিভিশনে প্রচার করা নিয়েও জটিলতা তৈরি হয়েছে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো: শামছুদ্দিন মাসুদ জানান, অধিদফতরের ওয়েবসাইটে শিক্ষকরা নিবন্ধন করলেও দক্ষ ও সিনিয়র শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ করা হয়নি। যাদের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে তাদের পাঠানো ভিডিও সম্প্রচার করা যাচ্ছে না। দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সমন্বয়হীনতার কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com