গত পাঁচ মাসে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ১ হাজার ১০৮টি মামলা হয়েছে জানিয়ে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গত ২৮ জুলাই থেকে ৯৯ হাজার ৩৮১ জন নেতাকর্মীকে আসামি করেছে পুলিশ।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) ভার্চুয়ালি এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য তুলে ধরেন।
রিজভী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ১৫৫ জনের অধিক নেতাকর্মী গ্রেফতার করা হয়েছে। ছয়টি মামলায় ৪২৯ জনের অধিক নেতাকর্মীকে (এজাহারনামীয়সহ অজ্ঞাত) আসামি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গত ২৮ ও ২৯ জুলাই থেকে অদ্যাবধি বিএনপির কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সারাদেশ থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ২৭ হাজার ২০১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ১ হাজার ১০৮টির অধিক মামলায় প্রায় ৯৯ হাজার ৩৮১ জনকে আসামি করেছে। ৯ হাজার ৩৯৯ জনের অধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
এছাড়া সাংবাদিকসহ ২৭ জন নিহত হয়েছেন বলে জানান বিএনপির এই মুখপাত্র।
রিজভী বলেন, ‘সরকারের পদত্যাগের একদফার আন্দোলন এখন বেশি ত্বরান্বিত হচ্ছে। জনগণ আমাদের কর্মসূচিতে সমর্থন দিচ্ছে। হাটে-মাঠে, ক্ষেতে-খামারে, বাজারে-শপিংমলে জনগণকে আমরা লিফলেট দিয়েছি। তারা আমাদের কথা শুনেছেন এবং সমর্থন দিচ্ছেন। কিন্তু অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করতে সরকার ২০১৩-১৪-১৫ সালে যেভাবে ষড়যন্ত্র করেছে সেটাই আবারো করছে। পুলিশ হয়রানি করছে, গ্রেফতার করছে ও মামলা দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘সারাদেশকে নৈরাজ্যের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে সরকার। দেশের মানুষ আতঙ্কের মাঝে দিন পার করছে। দেশে ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটেছে এবং নারকীয় প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রাজত্ব চলছে। বাড়ি থেকে লোকজনকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। নারীদের সাথেও দুর্ব্যবহার করছে। গ্রেফতার করলেও কোনো তথ্য দিচ্ছে না।’
রিজভী বলেন, ‘গণতন্ত্রে বিরোধী দল স্বীকৃত সত্য। কিন্তু সরকার সেটাকে মানতে চান না। যাতে তাদের ক্ষমতার মধুর হাড়ি উল্টে না যায়। বাংলাদেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলটির নেতাকর্মীরা বিএনপিকে নির্মূলের হুঙ্কার দিচ্ছেন। কিন্তু বিএনপি জনপ্রিয় কি না সেটা তো সুষ্ঠু নির্বাচনেই প্রমাণিত হবে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার জনগণের ওপর তার সাজানো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে সীমাহীন দমন-পীড়ন চালাচ্ছেন। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে আওয়ামী লীগ ভয় পাচ্ছে। নির্বাচন সামনে রেখে নীলনকশার বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। দেশকে নিয়ে গভীর ও ভয়ানক চক্রান্ত চলছে।’
দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে জিঘাংসামূলক বক্তব্য দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। যা মিথ্যা ও কাল্পনিক। তিনি রাজনীতির নীতি-নৈতিকতা মানছেন না।’