বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:২১ অপরাহ্ন

সিরিয়ানীতি নিয়ে তোপের মুখে ট্রাম্প

বাংলাদেশ রিপোর্ট
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৯
  • ৩২২ বার

সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের নীতি নিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা মিচ ম্যাককনেলের তোপের মুখে পড়েছেন। ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’-এ এক মতামত নিবন্ধে ট্রাম্পের নিজ দল রিপাবলিকানের সিনেটর মিচ ম্যাককনেল সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে ট্রাম্পের ঘোষণার কঠোর সমালোচনা করেছেন। সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ ও সিরিয়ায় তুরস্কের হামলা—এ দুটো মিলে ‘কৌশলগত দুঃস্বপ্ন’ তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

গত বুধবার ট্রাম্প তুর্কি-সিরিয়া সীমান্ত পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘কৌশলগতভাবে অসাধারণ’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘সীমান্তে তাদের (তুর্কি-কুর্দি) সমস্যা রয়েছে। ওটা আমাদের সীমান্ত নয়। এ জন্য আমাদের প্রাণ হারানো উচিত নয়।’

 আজ শনিবার বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, রিপাবলিকান পার্টির সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ সিনেটরদের একজন ম্যাককনেল ট্রাম্পের নীতির সমালোচনা করে বলেছেন, মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা ছিল ‘গুরুতর কৌশলগত ভুল’। সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা এবং তুর্কি-কুর্দি সংঘাত বৃদ্ধি—এ দুটো মিলে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য পরিকল্পিত দুঃস্বপ্ন তৈরি করছে। যদি যুদ্ধবিরতিও থাকে, তাহলেও তুর্কি হামলা এবং মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘটনা আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের লড়াইকে কষ্টসাধ্য করে তুলবে।

নিবন্ধে ম্যাককনেল ট্রাম্পের নাম সরাসরি উল্লেখ করেননি।

ম্যাককনেলের আগে অন্য রিপাবলিকান নেতারাও সিরিয়ার ব্যাপারে প্রেসিডেন্টের নীতির সমালোচনা করেছেন। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠজন বলে পরিচিত লিন্ডসে গ্রাহাম সেনা প্রত্যাহারের কড়া সমালোচনা করেছেন। গত বৃহস্পতিবার কুর্দি বাহিনীর সঙ্গে আলোচনার পর তিনি বলেন, ওই অঞ্চলটি কুর্দিদের জন্য গ্রহণযোগ্য। কিন্তু সামরিক দখলদারিতে যেখানে লাখো মানুষকে গৃহহারা হতে হয়, তা কখনো নিরাপদ অঞ্চল হতে পারে না। এটা জাতিগত নিধন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে রিপাবলিকান সিনেটর মিচ ম্যাককনেল। ছবি: এএফপি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে রিপাবলিকান সিনেটর মিচ ম্যাককনেল।

আগে গত বৃহস্পতিবার তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের চার ঘণ্টা বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে পাঁচ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল তুরস্ক। এই সময়ের মধ্যে কুর্দিনিয়ন্ত্রিত সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সের (এসডিএফ) মিত্রদের ওই এলাকা ছেড়ে চলে যেতে হবে। এর পরও সীমান্ত এলাকায় যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে।

ট্রাম্প সিরিয়ায় এসডিএফের পক্ষে মোতায়েন মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণার পরপরই সিরিয়ায় কুর্দিদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো শুরু করে তুরস্ক। সীমান্ত থেকে ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত ‘নিরাপদ অঞ্চল’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ৯ অক্টোবর থেকে কুর্দিনিয়ন্ত্রিত সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে অভিযান শুরু করে তুরস্ক। ওই ‘নিরাপদ অঞ্চলে’ তুরস্কে অবস্থানরত সিরিয়ার শরণার্থীদের প্রায় ৩৬ লাখকে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে তুরস্কের।

বলা হচ্ছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ১ লাখ ৬০ হাজার থেকে ৩ লাখের মতো মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। তুরস্কের এই অভিযানে সেখানে কুর্দি জনসংখ্যা জাতিগত নিধনের শিকার হবে বলে আশঙ্কা রয়েছে। তুরস্ক ও এর মিলিশিয়া মিত্ররা যেভাবে হামলা করছে, তাতে এটা যুদ্ধাপরাধের পর্যায়ে যাওয়ার উদ্বেগও রয়েছে। অসমর্থিত একটি সূত্র জানিয়েছে, তুর্কি বাহিনী যুদ্ধোপকরণে সাদা ফসফরাস ব্যবহার করছে। সাদা ফসফরাসে দেহের চামড়া পুড়ে যায়।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com