ভারতের হিন্দু অধ্যুষিত উত্তর প্রদেশের শহর অযোধ্যায় উদ্বোধন হচ্ছে প্রায় ২ হাজার কোটি রুপি ব্যয়ে নির্মিত রামমন্দির। আজ সোমবার ‘প্রাণ প্রতিষ্ঠা’ নামের এক অনুষ্ঠানে মন্দিরটি উদ্বোধন করবেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রামমন্দির প্রতিষ্ঠা তার ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) সরকারের অন্যতম রাজনৈতিক অঙ্গীকার। এ প্রতিশ্রুতি পূরণ এ বছর অনুষ্ঠেয় লোকসভা নির্বাচনের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
এরই মধ্যে সেখানে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। লতা মঙ্গেশকর চকে মোতায়েন করা হয়েছে রাজ্যের সন্ত্রাসবিরোধী স্কোয়াডের (এটিএস) সদস্যদের। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ঘিরে চলছে নানা আয়োজন।
অযোধ্যায় ‘মহোৎসব’ ঘিরে আঁকা হয়েছে দেয়াল। স্কুল শিক্ষার্থীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত। নানান রঙে উৎসবমুখর পরিবেশে সেজেছে অযোধ্যা।
আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, রামমন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে অযোধ্যায় আজ সোমবার অন্তত আট হাজার মানুষের সমাগম হতে চলেছে। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত রয়েছেন রাজনীতি থেকে শুরু করে বলিউড, বিজ্ঞান থেকে শুরু করে শিল্পবাণিজ্য সহ সমাজের বিভিন্ন জগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। ইতিমধ্যে সেখানে অনেকেই পৌঁছে গিয়েছেন।
ভারত জুড়ে ৭০টি শহরে মোট ১৬০টি প্রেক্ষাগৃহে মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখান হবে।
এই মন্দির নির্মাণে বড় অঙ্কের টাকা দিয়েছেন অনুপম, হেমা এবং অক্ষয়। কয়েকদিন আগে মন্দিরের সিঁড়ি ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করে আলোচনায় আসেন জ্যাকি শ্রফ।
৩২ বছর আগে অযোধ্যার এই জায়গাতেই গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ। বলা বাহুল্য, রামমন্দিরের উদ্বোধনীতে আমন্ত্রণ পাননি আমির, শাহরুখ এবং সালমান খান।
সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য মন্দিরের দরজা খুলবে মঙ্গলবার। সোমবার আমন্ত্রিত ছাড়া সাধারণ মানুষ মন্দিরে ঢুকতে পারবেন না। মঙ্গলবার থেকে সারাদিনে দু’বার রামমন্দিরের দরজা খোলা হবে সাধারণের জন্য।
রামমন্দির উদ্বোধনের আগে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে চিঠি লিখে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মুর্মু। ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’র আগে সন্তদের উপদেশ মেনে প্রধানমন্ত্রী ১১ দিন ধরে যে ‘ব্রতপালন’ করছেন, তার ভূয়সী প্রশংসাও করেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি শুভেচ্ছা বার্তায় লেখেন, ‘আপনি ১১ দিন ধরে যা ব্রতপালন করছেন, তা শুধু পবিত্র আচারই নয়, প্রভু শ্রীরামের প্রতি আত্মত্যাগ এবং তার কাছে আত্মসমর্পণ করাও।’
চিঠিতে মহাত্মা গান্ধীর কথাও উল্লেখ করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। লিখেছেন, ‘গান্ধীজিও ভগবান রামের বড় ভক্ত ছিলেন।’
অযোধ্যার ‘মহোৎসব’কে ‘ভারতের চিরন্তন আত্মার বহিঃপ্রকাশ’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।