দুটোই জটিল সমস্যা। সমাধানও কঠিন। চ্যালেঞ্জ আছে। এরপরও দুটি সমস্যা ভাবিয়ে তুলেছে সবাইকে। সামনে রমজান। এই সময়ে দুই ইস্যুতে সিলেট অস্থির হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা এনিয়ে করছেন চিন্তা-ভাবনা। প্রথমটি হচ্ছে; সিলেটের হকার সমস্যার সমাধান। এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে পারেননি সিলেটের সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন কামরান ও আরিফুল হক চৌধুরী। সাবেক এই দুই মেয়রই বিষয়টিকে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন।
তারা এমপি শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলকে নিয়ে বৈঠক করেছেন। দিয়েছেন নতুন আলটিমেটাম। ১৫ দিনের মধ্যে নগরের ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদ না হলে ব্যবসায়ীরা আন্দোলনে নামবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। কয়েক বছর আগেও ব্যবসায়ীরা এভাবে আলটিমেটাম দিয়েছিলেন। ওই সময় হকারদের সঙ্গে তারা সংঘর্ষেও জড়ান। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তবে সিলেটের হকার সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে সময় নিচ্ছেন মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। তিনি চান স্থায়ী সমাধান। এজন্য পুরনো স্থান হকার মার্কেট মাঠে হকারদের পুর্নবাসন করতে চান তিনি। সাংবাদিকদের জানিয়েছেন- সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি। এজন্য বার বার ঘুরে-ফিরে আসছে এই ইস্যুটি। এবার স্থায়ী সমাধানের জন্য সবার সঙ্গে কথা বলে কাজ শুরু করা হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে এর ফল পাওয়া যাবে। তবে সিলেট নগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান রিপন জানিয়েছেন- সমাধান যেভাবেই হোক আমরা আর সড়কে হকার দেখতে চাই না। প্রয়োজনে এনিয়ে আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে বলে জানান তিনি। সিলেটের দ্বিতীয় সমস্যাটি হচ্ছে; সিএনজি ফিলিং স্টেশনে গ্যাসের লোড সংকট।
সিলেটে রয়েছে ৫৬টি সিএনজি ফিলিং স্টেশন। ২০০৭ সাল থেকে তারা সিএনজি চালিত গাড়িতে গ্যাস সরবরাহ করছে। কয়েক বছর ধরে নতুন সিএনজি ফিলিং স্টেশনের অনুমোদন দেয়া বন্ধ। সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মালিকরা জানিয়েছেন- ২০০৭ সালে সিএনজি ফিলিং স্টেশন চালু হওয়ার সময় যানবাহন বিবেচনা করে পাম্প মালিকদের জন্য গ্যাস লোড করার সিদ্বান্ত হয়েছিল। এরপর থেকে সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে কয়েকগুণ। কিন্তু জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ লোড বাড়াচ্ছে না। এনিয়ে তারা কয়েক দফা গ্যাস বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। কিন্তু ফল হয়নি। এখন পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করেছে। প্রতি ইংরেজি মাসের শেষ ১০ দিন বেশির ভাগ পাম্পে লোড থাকে না। জালালাবাদ গ্যাস থেকে সরবরাহকৃত লোড ২০ দিনেই শেষ হয়ে যায়। ফলে বেশির ভাগ পাম্পই শেষ ১০ দিন বন্ধ রাখতে হয়। এতে করে যানবাহনের চাপ বেশি থাকায় শেষ ১০ দিন কাটে চরম অস্থিরতায়। এজন্য গত এক মাস ধরে বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি চালাচালি করা হয়েছে।
সিলেট জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. ময়নুল ইসলাম মানবজমিনকে জানিয়েছেন- গ্যাস না থাকার কারণে রাতভর চালকরা গাড়ি নিয়ে পাম্পে অবস্থান করেন। দিনে গাড়ি চালাতে তাদের সমস্যা হয়। এতে করে শ্রমিকরা দুর্ভোগ ও কষ্টে পড়েন। বিষয়টি নিয়ে তারা আলটিমেটাম দিয়েছেন প্রশাসনকে। ২৭ তারিখের মধ্যে এ সমস্যার সমাধান না হলে ২৮শে ফেব্রুয়ারি থেকে সিলেটে পরিবহন শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করবে জানান তিনি। একইসঙ্গে মিথ্যা মামলায় যেসব শ্রমিককে হয়রানি করা হচ্ছে, তা বন্ধের দাবিটিও তারা জেলা প্রশাসকের দেয়া স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ওনার্স এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব জুবায়ের আহমদ চৌধুরী জানিয়েছেন- সিলেটের সিএনজি পাম্পগুলোতে গ্যাস সংকট শুরু হয়ে গেছে। ফেব্রুয়ারির শেষ দিন পর্যন্ত এই সংকট চলমান থাকবে। তিনি বলেন, সড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে চারগুণ। লোড বেশি না থাকলে সিএনজি পাম্প মালিকরা তো দিতে পারবেন না। সুতরাং সিদ্ধান্তটি সরকারের তরফ থেকে দিতে হবে।