সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০৫ অপরাহ্ন

ঘন ঘন বদহজম প্যানক্রিয়াটাইটিসের লক্ষণ!

বাংলাদেশ ডেইলি অনলাইন:
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১০৫ বার

পেটে ব্যথা যেকোনো কারণেই হতে পারে। তবে ঘন ঘন এই সমস্যা দেখা দিলে অবহেলা না করাই ভালো। পেটে ব্যথার সাথে বমি- এই দুই লক্ষণ আরো মারাত্মক। অ্যাকিউট প্যানক্রিয়াটাইটিসের অন্যতম উপসর্গ হলো এই দুই লক্ষণ। প্যানক্রিয়াস বা অগ্ন্যাশয়ের মূল কাজ হলো পাচক রস বা এনজাইম তৈরি করা। এই পাচক রস আমাদের খাবার হজম করতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও অগ্ন্যাশয় ইনসুলিন বা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণকারী হরমোনও তৈরি করে।

সাধারণত পাচক রস বা এনজাইমস তৈরি হওয়ার পরে তা অগ্ন্যাাশয়ে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকে। অন্ত্রে পৌঁছনোর পরেই সেগুলো সক্রিয় হয়ে খাবার হজমে সাহায্য করে। কিন্তু কোনো কারণে যদি অগ্ন্যাাশয়ে থাকা অবস্থাতেই এনজাইমগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে, তখন তা প্যানক্রিয়াস গ্ল্যান্ডকেই হজম করতে শুরু করে। ফলে অগ্ন্যাশয়ে প্রদাহ শুরু হয়, এই প্রদাহকেই প্যানক্রিয়াটাইটিস বলে।

প্যানক্রিয়াসে প্রদাহ দু’ধরনের হতে পারে। একটি হল হঠাৎ প্রদাহ বা অ্যাকিউট প্যানক্রিয়াটাইটিস। দ্বিতীয়টি হলো ধীর গতির প্রদাহ বা ক্রনিক প্যানক্রিয়াটাইটিস।

কেন হয় এই রোগ?

নানা কারণেই অ্যাকিউট প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগ বাসা বাঁধতে পারে শরীরে। মূলত পিত্তনালিতে পাথর জমলে কিংবা অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে এই রোগ বাসা বাঁধে শরীরে। এ ছাড়াও শরীরে লিপিড বা ক্যালশিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। অগ্ন্যাশয়ে কোনো কারণে চোট-আঘাত লাগলেও এই রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তা ছাড়াও ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে বা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধের কারণে, ভাইরাল সংক্রমণ থেকে এবং কিছু কিছু অস্ত্রোপচারের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও এই রোগ হতে পারে। পরিবারে কারও এই রোগ থাকলেও জিনগত কারণেও অ্যাকিউট প্যানক্রিয়াটাইটিস হতে পারে।

কোন কোন লক্ষণ দেখে সতর্ক হবেন?

অ্যাকিউট প্যানক্রিয়াটাইটিসের ক্ষেত্রে পেটের যন্ত্রণা ক্রমশ গোটা পেটসহ পিঠের শিরদাঁড়ায় ছড়িয়ে পড়ে। বুকের দিকেও এই ব্যথা হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে আবার তীব্র যন্ত্রণার সঙ্গে বমিও হয়। ক্রনিক প্যানক্রিয়াটাইটিসের ক্ষেত্রে ঘনঘন পেটে ব্যথা হয়। খাবার হজম হয় না, ওজন কমতে থাকে। ডায়াবিটিস হতে পারে। অন্ত্রে এনজাইম পৌঁছয় না বলে, প্রোটিন বা ফ্যাটজাতীয় খাবার খেলেই পেটের সমস্যা শুরু হয়। বারবার মলের বেগ আসে।

এই রোগে কী প্রাণনাশের ঝুঁকি রয়েছে?

প্যানক্রিয়াটাইটিসে সিস্টেম অফ ইনফ্ল্যামেটারি রেসপন্স সিনড্রোম হতে পারে। যার ফলে গোটা শরীরে যে রক্তনালি রয়েছে, সেগুলো রক্ত বা ফ্লুয়িড ধরে রাখার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এতে রক্তনালিগুলো থেকে ফ্লুয়িড বেরিয়ে টিস্যুতে জমলে রোগীর শক তৈরি হয়। এই শক থেকেই প্রাথমিক অবস্থায় প্রাণহানির আশঙ্কা থাকে। আসলে অ্যাকিউট প্যানক্রিয়াটাইটিসের তিনটি ভাগ রয়েছে। মাইল্ড, মডারেট এবং সিভিয়র। ৯০ শতাংশ রোগীই মাইল্ড বা মডারেটের আওতায় পড়েন। ১০ শতাংশ রোগীর সিভিয়র প্যানক্রিয়াটাইটিস হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রেই প্রাণনাশের আশঙ্কা বেশি।

কী কী সাবধানতা নেয়া জরুরি?

ক্রনিক প্যানক্রিয়াটাইটিসে আক্রান্ত হলে চর্বিজাতীয় খাবার, যেমন ডিম, দুধ, রেড মিট এড়িয়ে চলতে হবে। তেল জাতীয় খাবার বা ভাজাভুজিও চলবে না। ধূমপান এবং মদ্যপানও অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। নিঃসন্দেহে প্যানক্রিয়াটাইটিস জটিল একটি রোগ। তবে ঠিক সময়ে চিকিৎসা করালে এবং কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে এই রোগ সেরে যেতে পারে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com