ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর শাখার জ্যেষ্ঠ শিক্ষক মুরাদ হোসেন সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের করা যৌন হয়রানির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার দাবি করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশের এ ইউনিটের অতিরিক্ত কমিশনার ড. খ. মহিদ উদ্দিন।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘ভুক্তভোগী আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ২২ ধারায় সাক্ষ্য দিয়েছে। তদন্ত শেষ করে আসামিকে বিচারের আওতায় আনা হবে। যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা অনেক তথ্য পাচ্ছি। আসামি এসব অভিযোগ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।’
খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘একজন শিক্ষকের কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ কেউ আশা করে না। ২৬ ফেব্রুয়ারি একজন বাদী লালবাগ থানায় আসেন। তিনি অভিযোগ করেন, গত বছর তার মেয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় গণিতের শিক্ষক মুরাদ হোসেনের ব্যক্তিগত কোচিং সেন্টারে প্রাইভেট পড়ত। তখন মুরাদ ওই ছাত্রী ও তার সহপাঠীদের সঙ্গে কুরুচিপূর্ণ আচরণ করেন। অনেক ছাত্রী এমন পরিস্থিতির শিকার হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘৭ ফেব্রুয়ারি মুরাদ হোসেনের বিরুদ্ধে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ করা হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি তাকে বরখাস্তের সুপারিশ না করে বদলির সুপারিশ করে। ১০ ফেব্রুয়ারি মুরাদকে প্রত্যাহার করে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়। এতে সন্তুষ্ট না হয়ে ১১ ফেব্রুয়ারি মুরাদের শাস্তির দাবিতে ছাত্রীরা আজিমপুর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে। মামলার পর ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে আমরা রাজধানীর কলাবাগানের বাসা থেকে আসামিকে গ্রেপ্তার করি।’
সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ড. খ. মহিদ উদ্দিন
এদিকে, দুই দিনের রিমান্ড শেষে আজ বৃহস্পতিবার মুরাদ হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালত শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে মুরাদ হোসেনকে গ্রেপ্তারের পরের দিন আসামির সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, লালবাগ থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ফাইয়াজ হোসেন। শুনানি শেষে তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির এক ছাত্রীর মা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় মুরাদ হোসেনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে রাজধানীর লালবাগ থানায় এ মামলা করেন। রাতেই ভিকারুননিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির জরুরি সভায় শিক্ষক মুরাদ হোসেন সরকারকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।