লক্ষ্মীপুরে বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে বেঙ্গল স্যু ইন্ডস্ট্রিজ লিমিটেডের শ্রমিকরা। এ সময় রায়পুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ করে।
শনিবার (৩০ মার্চ) সকাল ৮টায় থেকে ঢাকা-রায়পুর আঞ্চলিক সড়কের রাখালিয়া বাজার এলাকায় ওই কারখানার সামনে এ অবরোধ ও বিক্ষোভ করেন বিক্ষুব্দ শ্রমিকরা।
প্রায় চারঘণ্টা ধরে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে তারা। এতে সড়ক বন্ধ থাকায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী ও মালবাহী যানবাহন।
খবর পেয়ে রায়পুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। পরে দুপুর ১২টার দিকে রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে শ্রমিকদের এক মাসের বেতন ও বোনাসের ২৫ শতাংশ পরিশোধের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ থেকে সরে দাঁড়ায় শ্রমিকদের একাংশ। তবে অপর একাংশ আশ্বাস না মেনে অবরোধ চালিয়ে যায় এবং পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশ বাধ্য হয়ে লাটিচার্জ করলে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। এরপর অবরোধ তুলে দিলে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এর আগে শ্রমিক প্রতিনিধিদের নিয়ে কারখানার ম্যানেজার সাইফুল কবির, সিনিয়র প্রডাকশন ম্যানেজার নজরুল ইসলামের সাথে কথা বলেন রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: এমরান খান ও সহকারী পুলিশ সুপার (রায়পুর-রামগঞ্জ) সার্কেল আবদুল্লাহ মোহাম্মদ শেখ সাদি।
বৈঠকে শ্রমিকদের রোববার দুপুর ১২টার মধ্যে তাদের ব্যাংক হিসেবে এক মাসের বেতন দেয়ার আশ্বাস দেন। একইসাথে বোনাসের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবেন। তবে প্রথম দফায় বৈঠকে লিখিত কোনো আশ্বাস না পাওয়ায় শ্রমিকরা কর্তৃপক্ষের এ আশ্বাস প্রত্যাক্ষাণ করেন।
শ্রমিকরা জানান, এক একজন শ্রমিকের দুই থেকে নয় মাস পর্যন্ত ওভারটাইমসহ বকেয়া রয়েছে। বকেয়া বেতন পরিশোধ না করে হঠাৎ নোটিশ ছাড়া বিভিন্ন মাধ্যমে শনিবার সকাল ৮ থেকে ১৫ এপ্রির পর্যন্ত কারখানা বন্ধ করে দেয় মালিক পক্ষ। যার পরিপ্রেক্ষিতে সকালে রায়পুর বেঙ্গল স্যু কারখানায় তালা ঝুলতে দেখে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে শ্রমিকরা।
পরে ইউএনও, সহকারী পুলিশ সুপার, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে মালিক পক্ষ-শ্রমিক পক্ষের মধ্যে লিখিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
সর্বশেষ দুপুর পোনে ১২টায় রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইমরান খান শ্রমিকদের উদ্দেশে ঘোষণা দেন। এ সময় সহকারী পুলিশ সুপার, রায়পুর থানার ওসি, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে মালিক পক্ষ-শ্রমিক পক্ষের লিখিত যৌথ চুক্তি পড়ে শোনান।
ইউএনও মালিক পক্ষের সাথে ফোনালাপের ও মালিক-শ্রমিক পক্ষের চুক্তির রেফারেন্স দিয়ে জানান, রোববার ৩১ মার্চ শ্রমিকদের ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন সাথে ঈদ বোনাসের ২৫ শতাংশ ব্যাংক হিসেবের মাধ্যমে পরিশোধ করা হবে। ঈদের পরে মার্চ মাসের বেতনের সাথে অবশিষ্ট ৪০ শতাংশ দেয়ার কথা জানান তিনি।