সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫২ পূর্বাহ্ন

গরমে কাঁচা আম খেলে যা হয়

বিডি ডেইলি অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
  • ৮৩ বার

দেশজুড়ে গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপদাহ চলছে এখন। এদিকে গ্রীষ্মের ফলের বাজার এখন কাঁচা আমে ভরপুর। গরমের এ সময়টায় অনেকেই মুখরোচক ভর্তা হিসেবে কাঁচা আমের ভর্তা খেতে ভালোবাসেন। এ ছাড়া ডালের স্বাদ বাড়াতে কাঁচা আম দিয়ে ডাল রান্না করে থাকেন।

কিন্তু জানেন কী কাঁচা আম শুধু স্বাদেই ভালো নয়, খেয়াল রাখে স্বাস্থ্যেরও? খাদ্যগুণে পাকা আমের সঙ্গেও টক্কর দিতে পারে কাঁচা আম। ভিটামিন সি, কে, এ, বি৬ এবং ফোলেট-সহ প্রচুর পুষ্টি রয়েছে কাঁচা আমে।

গরমে স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী কাঁচা আম। তবে এর টক স্বাদের জন্য যারা কাঁচা আম খেতে পারেন না, তারা কাঁচা আমের জুস করে খেলেও এর উপকার পেতে পারেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কাঁচা আম থেকে কী কী উপকার করতে পারে।

* হিট স্ট্রোক থেকে রক্ষা করে: গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপদাহে সবচেয়ে বেশি ভয় হিট স্ট্রোক নিয়ে। মারাত্মক এই শারীরিক অবস্থা প্রতিরোধে কাঁচা আম খাওয়া উপকারী বলে মনে করা হয়। গরমে শরীরে পানির ভারসাম্য ও আদ্রতা বজায় রেখে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচাতে পারে কাঁচা আম। হিট স্ট্রোক থেকে রেহাই পেতে কাঁচা আমের জুস করে খেয়ে নিন। এতে শরীরের পানিশূন্যতা কমবে এবং তৃষ্ণা মেটাবে। পাশাপাশি হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি দূর হবে।।

* ঘামাচি প্রতিরোধ করে: গরমের সময় ঘামাচি একটি অস্বস্তিকর ব্যাপার। ঘামাচির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সবচেয়ে ভালো উপায় কাঁচা আম খাওয়া। কাঁচা আমের সঙ্গে চিনি, জিরা ও একটু লবণ মিশিয়ে সেদ্ধ করে জুস করে খেলে তা ঘামাচি রোধ করতে সাহায্য করে।

* ঝিমুনি দূর করে: দুপুরে খাওয়ার পর এই গরমে কিছুটা ঝিমুনি ভাব দেখা দিতে পারে। কাঁচা আমে আছে প্রচুর শক্তি। দুপুরের খাওয়ার পরে কয়েক টুকরা কাঁচা আম খেলে ঝিমুনি দূর হয়।

* শরীর ঠাণ্ডা রাখে: কাঁচা আমে পটাশিয়াম থাকার কারণে তা শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। এ কারণে শরীরে ঘাম কম হয়। গরমে ক্লান্তিও দূর হয় ।

* কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: খাদ্য হজমে সহায়তা করে কাঁচা আম। অন্ত্রকে পরিষ্কার করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয় কাঁচা আম। টুকরো করে আম কেটে লবণ মাখিয়ে তা মধুসহযোগে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।

* শরীরে লবণের ঘাটতি দূর করে: গরমে অতিরিক্ত ঘামে শরীর থেকে সোডিয়াম ক্লোরাইড ও লৌহ বের হয়ে যায়। কাঁচা আমের জুস শরীরের এই ঘাটতি দূর করতে পারে সহজেই। এছাড়া আপনি যদি অতিরিক্ত ঘামের সমস্যায় ভুগেন, তাহলে এ সমস্যা দূর করতে কাঁচা আমের জুস খেতে পারেন।

* রক্তের সমস্যা দূর করে: কাঁচা আমে আয়রন বা লৌহ থাকায় রক্তস্বল্পতা সমস্যা সমাধানে বেশ উপকারী।

* ওজন কমাতে সাহায্য করে: কাঁচা আমে খুব কম ক্যালোরি থাকে। এতে ফ্যাট, কোলেস্টেরল এবং চিনিও কম থাকে। যারা ওজন কমাতে চান তারা ডায়েটে রাখতে পারেন কাঁচা আম।

* অম্লতা দূর করে: বুক জ্বালাপোড়া বা অম্লতার সমস্যায় ভুগছেন? কাঁচা আম এ সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। অম্লতা কমাতে কাঁচা আমের এক টুকরো মুখে দিতে পারেন।

* হজম ভালো হয়: বদহজমের সমস্যা কমাতে বেশ উপযোগী কাঁচা আম। কাঁচা আমের মধ্যে গ্যালিক অ্যাসিড থাকার কারণে তা খাবার হজম-প্রক্রিয়াকে গতিশীল করে।

* শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: ভিটামিন সি, ভিটামিন ই এবং একাধিক অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকে কাঁচা আমে। এই সব উপাদান শ্বেত রক্তকণিকার কার্যকারিতা বাড়ায়, পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে।

* লিভার সুস্থ রাখে: কাঁচা আমে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে যা যকৃতের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সাহায্য করে। নিয়মিত সীমিত পরিমাণে কাঁচা আম খেলে যকৃতের সমস্যা প্রতিরোধ করা যায়, কারণ এটি পিত্তরসের নিঃসরণ বৃদ্ধি করে এবং অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ দূর করতে সাহায্য করে।

* হার্ট সুস্থ রাখে: কাঁচা আম ম্যাগনেশিয়াম এবং পটাশিয়াম সমৃদ্ধ। এই দুটি উপাদান রক্ত প্রবাহ ঠিক রাখার পাশাপাশি হার্টও সুস্থ রাখে। কাঁচা আমে থাকা ভিটামিন এবং খনিজগুলো রক্তনালী রিল্যাক্স করতে সাহায্য করে, যার ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। এছাড়াও, আমে ম্যাঙ্গিফেরিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রচুর পরিমাণে থাকে, যা হার্টের জন্য খুবই উপকারী।

* চোখ ভালো রাখে: কাঁচা আমে থাকে ভিটামিন এ। চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় ভিটামিন এ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও, লুটেইন ও জিয়াজ্যান্থিন থাকে কাঁচা আমে। চোখের রেটিনা ভালো রাখতে এই দুটি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট খুবই উপযোগী।

* কোরেস্ট্রেরল নিয়ন্ত্রণ করে: কাঁচা আমে থাকা ফাইবার, সোডিয়াম, পটাশিয়াম শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। পাশাপাশি এটি রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল এলডিএল এর মাত্রা কমাতে অত্যন্ত কার্যকরী।

* চুল ও ত্বক উজ্জ্বল করে: কাঁচা আমে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে তা চুল ও ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।

সতর্কতা: কথায় আছে, অতিরিক্ত কোনো কিছু ভালো নয়। কাঁচা আম খাওয়ার ক্ষেত্রেও বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। এছাড়া সবার শরীরে কাঁচা আম সহ্য নাও হতে পারে। কোনো সমস্যা বোধ করলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com