সরকারের জনসমর্থন শূন্যের কোঠায় জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, গতকালের প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ৭ জানুয়ারি নির্বাচন থেকে কম। তারা (সরকার) বলে, ভোট ফেয়ার (সুষ্ঠু) হয়েছে। তবে যে যতটুকু পেরেছে, সিল মেরেছে।
শুক্রবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশ ও মিছিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা-নিঃশর্ত মুক্তি এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও সকল রাজবন্দীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সমাবেশ ও মিছিলটি অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরো বলেন, আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সকলের মুক্তি চাই, শুধু তাই নয়, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে যারা কারাগারে আছেন সকলের মুক্তি চাই।
সরকারের জনসমর্থন শূন্যের কোঠায় জানিয়ে তিনি বলেন, গতকালের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ৭ জানুয়ারি নির্বাচন থেকে কম। তারা বলে, ‘ভোট ফেয়ার হয়েছে’। যে যতটুকু পেরেছে, সিল মেরেছে।
ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ভারতই আপনাদের বাঁচিয়েছে, বাঁচিয়ে রেখেছে। ফেলানীর লাশ যেমন কাঁটাতারে ঝুলছিল, তেমনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা, কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলছে। এটা হতে দেয়া যায় না।
আমাদের কর্মীরা ক্লান্ত কিন্তু হতাশ নয় জানিয়ে তিনি বলেন, যে অত্যাচার করা হয়েছে তারপরও বুক ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে স্বাধীনতা রক্ষায়। সেটা দমনোর ক্ষমতা কারো নেই। পার্শ্ববর্তী দেশেরও নেই।
সরকারকে উদ্দেশ করে গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, ক্ষমা পাওয়ার সময় পাবেন না। ক্ষমতার যত অপব্যবহার করেন, এর জবাব একদিন দিতে হবে। জবাব দিতে পারবেন কিনা জানি না। সেটি কি সহ্য করতে পারবেন? কারণ সীমালঙ্ঘনকারীকে আল্লাহ পছন্দ করেন না।
‘দেশের মানুষকে স্বচ্ছল করেছি’- প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রধামন্ত্রীর কথার সাথে বাস্তবের কোনো মিল দেখছি না। প্রধামন্ত্রীর কাছের ব্যক্তি দেখি বিশ্বের ধনী তালিকায় তৃতীয় হয়েছেন। আগে ছিলেন সিঙ্গাপুরের মধ্যে শীর্ষ ধনী তালিকায়, এবার গ্লোবালি ধনী হয়েছেন। আপনি দেশের মানুষের জন্য কাজ করেননি, কাজ করেছেন আপনার কাছের ব্যক্তির জন্য। আপনি স্বচ্ছল করেছেন, ছাত্রলীগ, যুবলীগকে। আর কাউকে করেননি। গরীব মানুষকে আরো গরীব করছেন, পদদলিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন বর্জন করায় দেশের জনগণকে অভিনন্দন জানান রিজভী। তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর যে দুঃশাসন কায়েম করছেন। এটা চলতে দেয়া যায় না।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় আরো উপস্থিতি ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব এমরান সালেহ প্রিন্স, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, ছাত্রদল নেতা ডাঃ তৌহিদুর রহমান আউয়াল প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড়, ফকিরাপুল মোড় ঘুরে পার্টি অফিসের সামনে এসে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।