সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৩ অপরাহ্ন

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ২টি গ্রামে আরাকান আর্মির হামলা

বিডি ডেইলি অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪
  • ৪১ বার

মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সাথে সেখানকার সশস্ত্র বাহিনীর তুমুল লড়াই চলছে। প্রচণ্ড গোলাগুলি ও মর্টার শেলের শব্দে কেঁপে উঠছে এপারের সীমান্ত জনপদ। ওপারে রোহিঙ্গা মুসলমানরা রয়েছে চরম আতঙ্কে। সঙ্ঘাতময় এই পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা মুসলিমদের দু’টি গ্রামে বিদ্রোহীরা হামলা চালিয়েছে।

মংডু ফিয়াজিপাড়া এলাকার আব্দুল্লাহ মোবাইল ফোনে তার খালা সেতারা বেগম ও খালু সোলতান আহমেদকে জানান, গতরাতে বিদ্রোহী আরাকান আর্মি তাদের বাড়ি-ঘরে হামলা চালিয়েছে। এদের হামলায় অনেকে নিহত হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে পাহাড়ি পথ দিয়ে পালানোর সময় প্রায় সাড়ে চার শ’ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে বলে দাবি করছে তারা। এসব রোহিঙ্গারা প্রাণ বাঁচাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

ইলিয়াছ নামের আরেক রোহিঙ্গা বলেন, মিয়ানমারের মংডু জেলার বুচিদং থানার টেটমিনসৌং এবং কেপ্রুদৌং গ্রাম দু’টির উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্বে মিলিটারির ব্যারাক ছিল। বিদ্রোহীদের হামলার মুখে মিলিটারি পালিয়ে গেলে গত ১৭ মে দিবাগত রাত ১০টার দিকে ৫০ জনের একটি গ্রুপ এবং ১৩ জনের একটি গ্রুপ এই দুই গ্রামে প্রবেশ করে এলোপাথাড়ি রকেট লাঞ্চার ছুড়তে থাকে এবং ঘর-বাড়ির ওপর পাউডার ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে অসংখ্য নারী-শিশু ও পুরুষের লাশ পড়ে রয়েছে। এ ঘটনার পর এই দুই গ্রামের ১৫ হাজারের মতো নারী-পুরুষ ও শিশুরা পালিয়ে যায়। এদের মধ্যে সাড়ে চার শ’ নারী-শিশু ও পুরুষের বহর মংডু জেলা শহরের দিকে পালিয়ে যাওয়ার সময় কালা পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে পৌঁছালে আরাকান আর্মির সদস্যরা তাদের ঘেরাও করে ফেলে এবং নারী-পুরুষ পৃথক করে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। মগ বাগি বা আরাকান আর্মির সদস্যরা তাদের মেরে ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

উখিয়া বালুখালী ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা সোলতান আহমদ বলেন, আপনারা যারা আরাকান আর্মি বলেন আমরা তাদের মগবাগি বলি। মগবাগি মানে কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, মগবাগি মানে সন্ত্রাসী। এরা সেখানকার সন্ত্রাসী গ্রুপ। এরা মগ। এরা কোনোদিনই মুসলমানদের পক্ষ হতে পারে না। ২০১৭ সালে মিয়ানমারের উগ্রপন্থী মগ আর নাসাকা বাহিনী মিলে আমাদের ওপর চরম নির্যাতন চালিয়েছে। এখনো কোনো মুসলমান রোহিঙ্গা সেখানে নিরাপদ নয়।

মংডু থেকে বাশার নামের আরেক রোহিঙ্গা যুবক জানান, আমরা প্রাণ রক্ষার্থে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এদিকে নাগাকুরার একটি সূত্র জানিয়েছে, মিলিটারিদের হাত ছাড়া হওয়া ব্যাটালিয়ন সদর পুনঃউদ্ধারের জন্য বিদ্রোহীদের ওপর হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিদ্রোহীরা ঘাঁটি ছাড়তে নারাজ হওয়ায় স্থানীয় রোহিঙ্গা মুসলিম নাগরিকদের সরিয়ে যেতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাদের যাওয়ার জায়গা না থাকায় সেখানেও হামলার শিকার হওয়ার আশঙ্কা করছে।

রোহিঙ্গা নারী সেতারা, জান্নাত আরা ও মরিয়ম বলেন, এখনো অনেক আত্নীয়-স্বজন মিয়ানমারে রয়েছে। তাদের সাথে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হয়। আমরা রোহিঙ্গা জাতি কোনো সময় ভালো ছিলাম না। সবসময় আমাদের ওপর অন্যায় ও জুলুম করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com