সরকারি চাকরিতে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের এক দফা দাবি আদায়ে আবারো ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এছাড়া ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
রোববার (১৪ জুলাই) বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে রাজধানীর গুলিস্তানের পাতাল মার্কেট এলাকায় এ ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, এক দফা দাবিতে আমরা রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অধিবেশন ডাকার দাবি জানিয়েছি। আমরা এই দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে চাই।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আজ আমাদের থামানো যায়নি। আমরা চাইছি না কঠোর কর্মসূচিতে যেতে। আমরা চাই দ্রুত দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিয়ে আমাদের দাবি মেনে নেয়া হোক। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করা হবে। এরপর আমরা সে অনুযায়ী পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করব।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের এ সমন্বয়ক বলেন, সময় ২৪ ঘণ্টা বাড়ানো হলো মামলা সরিয়ে নিতে। না হলে আমরা কঠোর কর্মসূচি নিয়ে সবাইকে জবাবদিহি করতে বাধ্য করব।
এর আগে, দুপুর ৩টার দিকে রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আদিল চৌধুরীর কাছে স্মারক লিপি জমা দেন তারা। তার আগে দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে ১২ সদস্যের শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি দিতে গেলে পুলিশ সদস্যরা তাদের ভেতরে নিয়ে যান।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন সারজিস আলম, নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, হাসিব আল ইসলাম, রিফাত রশিদ, হান্নান মাসুদ, সুমাইয়া আক্তার, আব্দুল কাদের, মেহেরুন্নেসা নিদ্রা, মো. মাহিন সরকার, আরিফ সোহেল ও আশিক।
এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রোববার বেলা ১১টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে গ্রন্থাগারের সামনে ছোট ছোট দল নিয়ে জড়ো হতে শুরু করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুর ১২টায় তারা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে এ পদযাত্রা শুরু করেন। পদযাত্রায় ঢাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যুক্ত হন।
এ সময় মিছিলটি বঙ্গভবনের উদ্দেশে এগিয়ে যেতে থাকলে দুপুর ১টার দিকে শিক্ষা ভবনের সামনে তাদের আটকাতে ব্যারিকেড দেয় পুলিশ। পরে শিক্ষার্থীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যান। এরপর গণপদযাত্রা নিয়ে শিক্ষা ভবন এলাকা অতিক্রম করে সচিবালয়ের কাছে পৌঁছালে ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ স্লোগান দিতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে সচিবালয় গেট বন্ধ করে দেয়া হয়।
তাদের এ কর্মসূচি রাজধানীর জিরো পয়েন্টে পৌঁছালে সেখানে পুলিশের ব্যারিকেড দেখা যায়। ব্যারিকেডের কারণে সামনে এগোতে না পেরে সড়কেই বসে পড়েন আন্দোলনকারীরা। এক পর্যায়ে দুপুর ১টা ৪০ মিনিটের দিকে গুলিস্তান জিরো পয়েন্টের ব্যারিকেড ভেঙে বঙ্গভবনের দিকে রওনা হন শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, শনিবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।