নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করার ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম৷
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) ভোর ৪টার পর ফেসবুকে দেয়া ভিডিও বার্তায় এ ঘোষণা দেন আন্দোলনের সমন্বয়করা।
এ সময় তার সাথে আরো দু’জন সমন্বয়ক উপস্থিত ছিলেন৷
ভিডিও বার্তায় সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের রূপরেখা দিতে আমরা ২৪ ঘণ্টা সময় নিয়েছিলাম। কিন্তু জরুরি পরিস্থিতি বিবেচনায় এখনই রূপরেখা ঘোষণা করছি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে। তার সাথে আমাদের কথা হয়েছে, তিনি দায়িত্ব নিতে সম্মত হয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, আমরা সকালের মধ্যে সরকার গঠনের প্রক্রিয়া দেখতে চাই। রাষ্ট্রপতির কাছে অনুরোধ থাকবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হোক। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বাকি সদস্যদের নামও আমরা সকালের মধ্যে ঘোষণা করব।
সেনা শাসিত সরকার মেনে নেয়া হবে না বলেও জানান তিনি।
এর আগে সারা দেশে সহিংসতা এবং লুটপাট রোধে ওয়ার্ডভিত্তিক সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা কমিটি গঠনের আহ্বান জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।
সোমবার দিবাগত রাত দেড়টায় তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে এ আহ্বান জানান।
আসিফ মাহমুদ বলেন, সারা দেশে স্ব-উদ্যোগে ওয়ার্ডভিত্তিক ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা কমিটি’ গঠনের জন্য ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থানের সকল অংশগ্রহণকারী ও আপামর জনতার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। দ্রুত বাস্তবায়নে এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। দেশ গঠনে সচেষ্ট হোন।
অপর এক পোস্টে তিনি বলেন, আওয়ামী নৈরাজ্য ও ঘৃণ্য রাজনীতি প্রসূত এই সাম্প্রদায়িক উসকানি, হামলা এবং সকল লুটতরাজ রুখে দেয়ার জন্য ছাত্র-নাগরিকের প্রতি জোরালো আহ্বান থাকল। আপনারা আপনাদের নিজ নিজ এলাকার মসজিদ থেকে এই সাম্প্রদায়িক হামলা রুখে দেয়ার ঘোষণা দিন এবং হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধসহ অন্য ধর্মাবলম্বী নাগরিকদের জান ও মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। আওয়ামী সন্ত্রাস রুখে দিতে হবে, সবাই এগিয়ে আসুন।
উল্লেখ্য, সোমবার (৫ আগস্ট) দুপুর আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টারে শেখ হাসিনা উড্ডয়ন করেন। এ সময় তার ছোট বোন শেখ রেহানা সাথে ছিলেন।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন। শেখ হাসিনা যাওয়ার আগে একটি ভাষণ রেকর্ড করে যেতে চেয়েছিলেন। তিনি সে সুযোগ পাননি।
দুপুরে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যাওয়ার ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রবেশ করেন হাজারো ছাত্রজনতা।