জাতিসঙ্ঘ বলেছে, বাংলাদেশে জোরপূর্বক গুমের দীর্ঘ ও বেদনাদায়ক ইতিহাস রয়েছে। জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার দফতর ও জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার মেকানিজম এই বিষয়টিকে জোরালোভাবে বিশ্বাস করে।
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি বলেন, ‘আমরা কমিশনকে তার কাজে সমর্থন করতে প্রস্তুত রয়েছি। কমিশন ক্ষতিগ্রস্ত এবং তাদের পরিবারের সাথে ঘনিষ্ঠ পরামর্শ এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ডের সাথে সামঞ্জস্য রেখে হওয়া উচিত। যার মধ্যে নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানের নীতিগত নির্দেশিকা থাকবে।’
জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার দফতর এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও জনগণকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, জবাবদিহিতা ও সমঝোতা এবং বাংলাদেশের সকল মানুষের জন্য মানবাধিকারকে এগিয়ে নিতে সমর্থন করতে চায়।
মানবাধিকারের হাইকমিশনার জোরপূর্বক নিখোঁজ হওয়া থেকে সকল ব্যক্তির সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক কনভেনশনে বাংলাদেশের যোগদানের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর মাধ্যমে জোরপূর্বক নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের হদিস করতে পাঁচ সদস্যের একটি জাতীয় তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে।
এর আগে জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে একটি নিরপেক্ষ ও স্বাধীন ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন পরিচালনার জন্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছ থেকে একটি আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ পান।
মুখপাত্র বলেন, বিক্ষোভের সময় সংঘটিত সহিংসতা ও নিপীড়নের বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি, মূল কারণগুলো বিশ্লেষণ, ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা এগিয়ে নিতে এবং দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের জন্য সুপারিশের লক্ষ্যে আগামী সপ্তাহগুলোতে বাংলাদেশে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম মোতায়েন করবে মানবাধিকার সংস্থা।
দলটি এই কাজে পূর্ণ সহযোগিতার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং নিরাপত্তা বাহিনীর কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি পেয়েছে বলে জানান তিনি।
সাম্প্রতিক বিক্ষোভে আটক ও আহত হওয়া ছাত্র নেতাদের সাথে বৈঠক করতে গত সপ্তাহে (২২ থেকে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত) একটি দল বাংলাদেশে এসেছে।
দলটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি, পুলিশ ও সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আইনজীবী, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি এবং সংখ্যালঘু ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের সাথে বৈঠক করেছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অনুরোধে সাম্প্রতিক সহিংসতা ও অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতনের তদন্তের পদ্ধতি নিয়ে দলটি বৈঠকগুলোতে আলোচনা করেছে।
শামদাসানি বলেন, বিস্তৃত ক্ষেত্রগুলো নিয়েও আলোচনা হয়েছে- যার মধ্যে নাগরিক সুযোগ, সত্যের প্রয়োজনীয়তা, ন্যায়বিচার, মুক্তি, ক্ষতিপূরণ ও সমঝোতা এবং সংস্কার প্রক্রিয়ার অন্যান্য মানবাধিকারের পন্থাসহ বিস্তৃত ক্ষেত্রগুলো রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে আমাদের সংস্থা টেকসই সহায়তা সরবরাহ করতে পারে।
সূত্র : ইউএনবি