বাংলাদেশী-আমেরিকান উদ্যেক্তা ও কম্পিউটার প্রোগ্রামার ফাহিম সালেহর খুনি বিচারককে জানিয়েছেন, তিনি যে অপরাধ করেছেন, তাতে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্য। ম্যানহাটনের ওই বিচারক অবশ্য তাকে ৪০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।২০২০ সালে প্রেমিকাকে খুশি করার জন্য চার লাখ ডলার চুরি করার পর ফাহিম সালেহকে নির্মভাবে হত্যা করে টাইরেস হাসপিল নামের ওই খুনি।
মঙ্গলবার আদালতে হাসপিলের আইনজীবী প্রায় এক ঘণ্টা যুক্তি উপস্থাপন করেন। প্রসিকিউটররা তার ৫০ বছরের কারাদণ্ড চেয়েছিলেন। হাসপিলের আইনজীবী এত দিনের কারাদণ্ডকে কঠিন শাস্তি হিসেবে অভিহিত করেন। ঠিক তখনই হাসপিল নিজেই তার সাজা নিয়ে নিজের ধারণা প্রকাশ করেন।
আদালতকক্ষকে অবাক করে দিয়ে তিনি বিচারক এপ্রিল নিউবাউয়ারকে বলেন, ‘আমার আইনজীবীর বিপরীতে গিয়ে বলছি, প্যারোল ছাড়াই যাবজ্জীবনের চেয়ে কম কোনো সাজা আমার হওয়া উচিত নয় বলে আমি মনে করি।’
হাসপিলের, ২৫, বিরুদ্ধে সেকেন্ড ডিগ্রি খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
২০২০ সালের ১৩ জুলাই নিউ ইয়র্কে ফাহিম সালেহর ২.২ মিলিয়ন ডলারের ইস্ট হিউস্টন স্ট্রিট অ্যাপার্টমেন্টে হত্যঅ করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
আদালতে ফাহিমের বোন রিফ সালেহ বলেন, ‘তোমার কাছে ফাহিম ছিল স্রেফ একটি ডলারের স্মারক, যে জীবনের জন্য কাজ করোনি, তার একটি টিকিট। কিন্তু তুমি দুনিয়ার ওপর কী প্রভাব ফেলেছো জানো? তোমার প্রতি আমার কোনো করুণা নেই। তুমি সারা জীবন কারাগারে থাকার উপযুক্ত।’
পুলিশি তদন্তে দেখা যায, চার লাখ ডলার হাতিয়ে নেওয়ার পর টেক সিইও ফাহিম সালেহকে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশকে টুকরা টুকরা করা হয়।
পুলিশ জানায়, হাসপিল ছিলেন ফাহিম সালেহর ‘এক্সিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট।’ ফাহিমের আর্থিক ও ব্যক্তিগত বিষয়াদি তিনি দেখাশোনা করতেন। বস ফাহিমের কাছ থেকে তিনি বিপুল পরিমাণ অর্থও ঋণ নিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, ফাহিম সালেহকে অনেকে ‘উন্নয়নশীল বিশ্বের এলন মাস্ক’ হিসেবে অভিহিত করতেন। তার খুনিকেও তিনি উদারভাবে সহায়তা করতেন। তবে তিনি যখন জানতে পারেন যে এই লোক তার সাথে প্রতারণা করছে, তখন তিনি তাকে বাদ দেয়ার পরিকল্পনা করেন। আর এতেই ক্রুদ্ধ হয়ে তিনি তাকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন।
সূত্র : নিউ ইয়র্ক পোস্ট