গাজীপুরে শ্রমিকদের দুই মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে টানা ২৮ ঘণ্টার অবরোধে অচল হয়ে পড়েছে।
রোববার (১০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মালেকের বাড়ি এলাকায় টি অ্যান্ড জেড গ্রুপের ছয় কারখানার শ্রমিকরা এ বিক্ষোভ করে।
এ সময় শ্রমিকরা বকেয়া বেতন আদায় না হওয়া পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলাচলকারী হাজার হাজার মানুষ। মহাসড়কের উভয় পাশে আনুমানিক ২০ কিলোমিটার রাস্তাজুড়ে জ্যাম সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় জ্যামে আটকা পড়া যানবাহন মহাসড়ক ছেড়ে আশপাশের শাখা সড়ক দিয়ে বিকল্প পথে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এতে নগরীর অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতে পরিবহনের চাপ বাড়ছে।
শ্রমিক অবরোধের কারণে যানজট ছড়িয়ে পড়ছে নগরীতে। তীব্র যানজটের কারণে নগরবাসীর স্বাভাবিক চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে। গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতনের জন্য ওই শিল্পকারখানার শ্রমিকদের মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরেই উত্তেজনা চলছিল। গত কয়েক দিন ধরে দফায় দফায় মহাসড়ক অবরোধের কারণে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে আসছে।
আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, ‘বকেয়া পাওনা পরিশোধ না করেই কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধ করে দেয়। তারা পাওনা পরিশোধের দাবি জানালে কারখানা কর্তৃপক্ষ ইতোপূর্বে একাধিকবার আশ্বাস দিয়েও কথা রাখেনি। ফলে শ্রমিকরা বকেয়া আদায়ের জন্য দফায় দফায় মহাসড়ক অবরোধ করছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ বার বার ওয়াদা ভঙ্গ করায় এখন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ কোনো মধ্যস্থাতাকারীর উদ্যোগই আর কাজে আসছে না।’
আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, ‘কারোর প্রস্তাবেই তাদের আর আস্থা নাই। কারণ, এর আগেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর আশ্বাসে তারা অবরোধ তুলে নেন। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ কথা রাখেনি।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, ‘কারখানা কর্তৃপক্ষ টাকা ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছেন। এ বিষয়ে ঢাকায় বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) নেতাদের সাথে আলোচনা চলছে। আশা করছি, দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা শ্রমিকদেরকে বুঝানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু তারা বকেয়া পাওনা আদায় ছাড়া মহাসড়ক ছাড়তে নারাজ। কারখানা কতৃপক্ষ বারবার কথা দিয়ে বেতন পরিশোধ করতে না পারায় শ্রমিকরা আমাদের ওপর আর আস্থা রাখতে পারছেন না। ফলে বারবার চেষ্টা করার পরও শ্রমিকরা মহাসড়ক ছাড়ছে না।’