গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে বুধবার নিরাপত্তা পরিষদে আনিত প্রস্তাবের ওপর আবারো ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের কারণে যুদ্ধবিরতি চুক্তি আটকে গেল।
ওয়াশিংটনের দাবি, এক্ষুণি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব পাস হলে স্বাধীনতাকামী হামাস যোদ্ধারা উৎসাহিত হবে। ফলে বন্দী উদ্ধার অনেকটা কঠিন হয়ে পড়বে।
জাতিসঙ্ঘের যুক্তরাষ্টের রাষ্ট্রদূত রবার্ট উড বলেন, ‘এই যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব হামাসের জন্য ভয়ঙ্কর বার্তা বয়ে আনবে। কারণ বন্দী উদ্ধারে আলোচনার টেবিলে বসে সমঝোতা না করলে তাদের মুক্তিলাভ কখনো সম্ভব হবে না।’
বুধবার অনুষ্ঠিত এই ভোটে নিরাপত্তা পরিষদের অন্য সদস্যদের তীব্র সমালোচনা করে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, প্রস্তাবটি নিয়ে সমঝোতার প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করা হয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদের ১৫টি স্থায়ী রাষ্ট্রের মধ্যে ১০টি সদস্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব উপস্থাপন করা। এতে গাজায় অবিলম্বে, নিঃশর্ত এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়। একইসাথে বন্দীদের মুক্তি দাবি করা হয়। তবে একমাত্র স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে প্রস্তাবটি আটকে দেয়।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গাজায় ইসরাইলি বন্দীদের কথা ভুলে গেছে। কিন্তু আমরা তা হতে দিতে পারি না। আমরা বন্দীদের ভুলে যেতে পারি না।
এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক প্রচেষ্ঠা অব্যাহত থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের এই ভেটোকে সঙ্কট সমাধানের পথে বড় বাধা হিসেবে দেখা হয়েছে। এতে পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে মতবিরোধ আরো গভীর হয়েছে।
এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটি ছিল কয়েক সপ্তাহের আলোচনার ফসল। নিরাপত্তা পরিষদের নির্বাচিত ১০ সদস্য রাষ্ট্র প্রস্তাটি উপস্থাপন করে। ২০২৩ সালের অক্টোবরের পর এই নিয়ে চতুর্থবারের মতো নিরাপত্তা পরিষদে গাজা যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ভেটো দিলো যুক্তরাষ্ট্র।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী হামাস যোদ্ধারা ইসরাইলে হামলা চালিয়ে এক হাজার ২০৬ জনকে হত্যা এবং ২৫০ জনেরও বেশি মানুষকে পণবন্দী করে।
জবাবে ইসরাইল গাজায় প্রায় ১৪ মাস ধরে সামরিক অভিযান চালিয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৪ হাজার বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে। এর মধ্যে বেশিভাগই নারী ও শিশু। সম্প্রতি ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় প্রায় ১৭ হাজার শিশু নিহত হয়ছে।
সূত্র : বাসস