গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোর অগ্রাধিকারের প্রতি সমর্থনসূচক বিবৃতি দিয়ে রিও ডি জেনিরোতে বিশ্বের ধনী দেশগুলোর নেতারা দু’দিনের জি-২০ সম্মেলন শেষ করেছেন। এ বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্য কমানো ও কোটিপতিদের ওপর কর বাড়ানো।
সাধারণত গ্লোবাল সাউথ বলতে উন্নয়নশীল দেশ এবং একইসাথে রাশিয়া ও চীনকেও বোঝানো হয়।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা ছিলেন এবারের জি-২০ সম্মেলনের আয়োজক। তিনি তার বক্তব্যে তিনটি মূল স্তম্ভের ওপর জোর দেন। এগুলো হলো সামাজিক অন্তর্ভুক্তি এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মোকাবিলা; জ্বালানি, রূপান্তর ও জলবায়ু-সংক্রান্ত পদক্ষেপ এবং বৈশ্বিক সুশাসন ব্যবস্থার সংস্কার।
লুলা মন্তব্য করেন, বিশ্বায়ন ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ক্রমবর্ধমান গোলযোগের মাঝে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেন হাল ছেড়ে দিয়ে লক্ষ্যহীনভাবে নানা আধিপত্যবাদী বিতর্কের মধ্য দিয়ে ভেসে যাচ্ছে। এই ভেসে যাওয়া দেখে মনে হচ্ছে যেন একটি জলোচ্ছ্বাস আমাদেরকে ভয়াবহ দুর্যোগের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’
যৌথ বিবৃতিতে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও দারিদ্র্য কমানোর গুরুত্বের ওপর তাগিদ দেয়া হয়। তারা একসাথে কাজ করে সবচেয়ে বেশি সম্পদের অধিকারী ব্যক্তিরা যেন যথোপযুক্ত করের বোঝা বহন করেন তা নিশ্চিত করতে একমত হন তারা।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, (অর্জিত সম্পদের সাথে তাল মিলিয়ে) ধাপে ধাপে করের পরিমাণ বাড়ানোর প্রক্রিয়া অভ্যন্তরীণ বৈষম্য দূর করার অন্যতম প্রধান চাবিকাঠি এবং এতে বলিষ্ঠ, টেকসই ভারসাম্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নকে প্রণোদিত করা হয় এবং জাতিসঙ্ঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন সহজতর হয়।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, এই সম্মেলনে জো বাইডেন তার ‘নেতৃত্বের ঐতিহ্য’ অব্যাহত রাখেন, যার মধ্যে আছে নেতাদেরকে ‘খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদি নেতৃত্ব’ মেনে নিজেদের গড়ে তোলার পাশাপাশি ভবিষ্যত গড়তে বিনিয়োগ বাড়ানো, বিশ্বব্যাপী টেকসই জ্বালানিতে রূপান্তর, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মোকাবিলা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল রূপান্তর প্রক্রিয়াকে সব কিছুর ওপরে রাখা।
সম্মেলনের সাইডলাইনে বাইডেন ও লুলা বৈঠক করেন। এ বৈঠকে তারা জলবায়ু সঙ্কটের মোকাবিলা করার বিষয়টিকে অত্যন্ত জরুরি বলে উল্লেখ করেন। এটি ছিল এমন একটি বিষয়, যা নিয়ে উপস্থিত নেতাদের মধ্যে অনিশ্চয়তা দেখা যায়।
আগামী জি-২০ সভাপতি রাষ্ট্র দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে দায়িত্ব অর্পণ করে সম্মেলন শেষ করে ব্রাজিল।
সূত্র : ভিওএ