সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের নাটুয়ারপাড়া, খাসরাজবাড়ী, তেকানী, নিশ্চিন্তপুর, চরগিরিশ, মনসুরনগর, মাইজবাড়ী ও শুভগাছার দুর্গম বালুর চরের এখন মরিচে লালে লাল। এবার আশাতীত উৎপাদন হওয়ার পাশাপাশি দামও পাওয়া যাচ্ছে ভালো। ফলে মরিচ চাষির মুখে হাসি ফুটেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজার দরে বড় কোনো পরিবর্তন না ঘটলে এবার কাজিপুরেই ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকার শুকনা মরিচ কেনাবেচা হবে।
উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, মরিচ তোলা, তার পরিচর্যা আর শুকানোর কাজে ব্যস্ত কৃষক। যারা শুকাতে পারছেন না, তারা জমি থেকে টোপা মরিচ (ক্ষেতে পাকা মরিচ) তুলেই বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছেন। কারণ প্রায় পৌনে চার কেজি টোপা মরিচ শুকানোর পর এক কেজি শুকনো মরিচ হয়। সেই টোপা মরিচই বাজারে বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকা মণ দরে। আর স্থানীয় বাজারে শুকনো মরিচের দর প্রতি মণ ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। মরিচের জন্য বিখ্যাত নাটুয়ারপাড়া হাট ঘুরে দেখা গেছে, ভাড়ে করে, মাথাই করে, ঘোড়ার গাড়িতে মরিচ আনছেন কৃষকরা।
কাজিপুরের নাটুয়ারপাড়া হাট প্রতি সপ্তাহের শনি ও বুধবার বসলেও সেখানে জামালপুরের সরিষাবাড়ী, বগুড়ার শেরপুর, ধুনট, সিরাজগঞ্জের পাইকারি ক্রেতারা আসছেন প্রতিদিনই। মরিচ কিনছেন তারা। এছাড়া স্থানীয় ধান-চাল ব্যবসায়ীরা মরিচের মৌসুমে ধানের পরিবর্তে মরিচ কিনে তাদের চাতালে শুকান। এমনই এক ব্যবসায়ী লাল মিয়া, সালাম সরকার, আল-আমিন প্রমুখ।
কাজিপুর উপজেলা কৃষি অফিসার রেজাউল করিম জানিয়েছে, এই উপজেলায় মোট ৩২০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে। সেই হিসেবে আশা করা হচ্ছে এবার ৬৪০ মেট্রিকটন শুকনো মরিচ উৎপাদন হবে। গড়ে ২০০ টাকা কেজি ধরলে এবার কাজিপুরে উৎপাদিত মরিচের অর্থমূল্য দাঁড়ায় ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা।