রাজার মতো খেলছেন রোহিত শর্মা। ক্যারিয়ারে প্রথম টেস্ট ডাবল সেঞ্চুরি করে এলিট ক্লাবেও ঢুকে পড়েছেন। রাঁচিতে তার ২১২ রানের ওপর ভর করে ভারত ৯ উইকেটে ৪৯৭ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে। ব্যাটে নয় শুধু আগের দুম্যাচের মতো বল হাতেও দারুণ কিছু করার ইঙ্গিত দ্বিতীয় দিন শেষে। আলোর অভাবে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে ৯ রান তুলতেই ওপেনার এলগার ও ডি কককে হারিয়ে বসেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ডাবল সেঞ্চুরি দিয়ে অনেকগুলো রেকর্ড গড়েছেন রোহিত। এর মধ্যে একটা রেকর্ড খুব মজার। তা হলো প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে আগে ওয়ানডে ডাবল সেঞ্চুরির পর টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করলেন তিনি। শচীন টেন্ডুলকার, বীরেন্দ্র শেওয়াগ ও ক্রিস গেইল টেস্টে আগে, পরে ওয়ানডেতে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন। এছাড়াও ১৭টা ছক্কা মেরে এক সিরিজে বেশি ওভার বাউন্ডারির রেকর্ড আগেই গড়েছিলেন তিনি। সেই সংখ্যাটা ১৯-এ নিয়ে গেছেন। চলতি বছরে এত ছক্কা টেস্টে আর কেউ মারতে পারেনি।
সেঞ্চুরির মতো ডাবলেও পৌঁছেছেন রোহিত ছক্কা মেরে। তবে ১৯৮ রানে থাকা অবস্থায় ভাগ্যের সহায়তাও পেয়েছেন তিনি। কাগিসো রাবাদার বলে প্লেড-অন হওয়ার হাত থেকে অল্পের জন্য বেঁচে যান তিনি। ১৯৯ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যান তিনি। ফিরে এসে এনগিদি লুঙ্গির করা তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই ছক্কা মেরে ডাবল সেঞ্চুরিতে পৌঁছান তিনি। ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ইনিংসে চলতি সিরিজে তার সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ৫২৯, গড় ১৩২.২৫। ৩ টেস্টের সিরিজে পাঁচ শতাধিক রান করা পঞ্চম ভারতীয় তিনি। ৭৭৪ রান করে সবার আগে গাভাস্কার। বাকি তিনজন- ভিনু মানকড়, বুধি কুন্দরন ও বীরেন্দ্র শেওয়াগ।
ঘরের মাঠে রান তোলায় কিংবদন্তির স্যার ডন ব্র্যাডম্যানকে ছাড়িয়ে গেলেন রোহিত। ১৮ ইনিংসে ১২৯৮ রান করেছেন তিনি ৯৯.৮৪ গড়ে। ১০ ইনিংসের বেশি খেলা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ডন ব্র্যাডম্যানই এক্ষেত্রে রোহিতের কাছাকাছি, তার গড় ৯৮.২২। রোহিত-বীরত্বে আড়ালে পড়ে যায় আজিঙ্কা রাহানের ১১ সেঞ্চুরি। ৩ বছর পর দেশের মাটিতে সেঞ্চুরির খোঁজ পেলেন রাহানে। তাকে আউট করে ২৬৭ রানের জুটি ভাঙেন স্পিনার জর্জ লিন্ডে। কেশব মহারাজের ইনজুরির কারণে দেশ থেকে জরুরি ভিত্তি উড়িয়ে আনা লিন্ডে নিয়েছেন ৪ উইকেট। তবে উমেশ যাদবের হাতে বেধড়ক পিটুনির শিকার হয়েছেন তিনি। দুই ওভারে তার ৭ বলে ৫টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন উমেশ। রাবাদা রোহিতের উইকেটসহ নেন ৩ উইকেট।
মাত্র ১ রানের জন্য ডাবল সেঞ্চুরিটা হয়নি লাঞ্চের আগে। ১৯৯ রান নিয়ে লাঞ্চে যান রোহিত। সে সময়কার অনুভূতি বলেছেন দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে, ‘খেলাটাই এমন। এ নিয়ে কিছু করার নেই। এটাকে হতাশার বলব না। এটাই খেলার নিয়ম। সেশন শেষ হয়ে গিয়েছিল। আমার দিক থেকে বলতে পারি, আমি ওসব (ডাবল সেঞ্চুরি) নিয়ে ভাবছিলাম না। কারণ জানতাম এক সময় হবে। জানতাম যখন হওয়ার হবে। সেই মুহূর্তে আমি ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করছিলাম। যদিও জানতাম সময়টা উদ্বেগের। কিন্তু কিছুই করার ছিল না। তবে ১৯৯ অপরাজিত অবস্থায় লাঞ্চ করে ফেরার পর আমার ভালোই লাগছিল।’