করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন (এইচসিকিউ) ব্যবহার করা নিয়ে কিছুদিন আগেও গোটা বিশ্বে প্রবল আগ্রহ তৈরি হয়েছিল। ভারতে এইচসিকিউ-এর ব্যবহার দেখে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তত্ত্বাবধানে অন্যান্য দেশেও ওষুধটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছিল।্ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজে এই ওষুধ সেবনের কথা জানিয়েছেন। কিন্তু একদল মার্কিন গবেষক হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের পাশ্ব্র্প্রতিক্রিয়া রয়েছে জানিয়ে তা নিয়ে সরব হয়েছেন। এমনকি করোনা মোকাবিলায় এর কোনও কার্যকারিতা নেই বলেও জানানো হয়েছে। সম্প্রতি চিকিৎসা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘দ্য ল্যানসেট’-এ বলা হয়েছে, নানা দেশে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন (এইচসিকিউ ) প্রয়োগের ফলে রোগীদের অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন লক্ষ্য করা গিয়েছে। এরপরেই বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থা এই ওষুধের পরীক্ষায় আপত্তি জানিয়েছে। এর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ আপাতত বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছে তারা। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বারণ সত্ত্বেও ভারত এই ওষুধ প্রয়োগ চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে।
মঙ্গলবার ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) সাংবাদিকদের প্রশ্নর উত্তরে জানিয়েছে, ভারতে দীর্ঘদিন ধরে ওই ওষুধ ব্যবহার হচ্ছে। এইচসিকিউ-এর সেই অর্থে কোনও ক্ষতিকর পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নেই। আইসিএমআর-এর ডিজি বলরাম ভার্গব বলেছেন, ভারতে যে-ভাবে করোনা-প্রতিরোধক হিসেবে ওই ওষুধের ব্যবহার চালু রয়েছে, তা চালু থাকবে। এতে ভয়ের কিছু নেই। শুধু খালি পেটে ওষুধটি খাওয়া চলবে না। চিকিৎসক ও নার্স সহ স্বাস্থ্যকর্মীদের কোভিড সংক্রমণ রুখতে এইচসিকিউ ব্যবহার করে ভারত প্রথম থেকেই সাফল্য পেয়েছে বলে দাবি করেছে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রক। ভার্গব জানিয়েছেন, গত কয়েক মাস ধরে দেশের স্বাস্থ্যকর্মীদের ওই ওষুধ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের উপরে নিয়মিত নজর রেখেছে এইমস, আইসিএমআর ও দিল্লির তিনটি সরকারি হাসপাতাল। তেমন কোনও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। উল্টে স্বাস্থ্যকর্মীদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার হার ক্রমশ কমে এসেছে। তাই পুলিশ ও আধাসেনাকেও ওই ওষুধ দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শেই যেন ওষুধ দেওয়া হয় এবং ওষুধ দেওয়ার পরে রোগীর ইসিজি করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।