নওগাঁর রাণীনগরে হত-দরিদ্রদের জন্য সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর ১০ টাকা কেজি দরের চাল নিয়ে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। এতে ডিলারসহ উভয় পক্ষের অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছে। আহতদের রাণীনগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সকালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামে।
স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে, রাণীনগর সদর খট্রেশ্বর ইউনিয়নের হত-দরিদ্রদের জন্য সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর ১০ টাকা কেজি দরের চালের ডিলার এসএম শরিফ উদ্দীন গত ৩১ মে এলাকার বেশ কিছু কার্ডধারীদের কাছে চাল বিতরণ করেন। এসময় উপজেলা সদরের দক্ষিন রাজাপুর গ্রামের কার্ডধারী সুবিধাভোগী আব্দুর রউফ রতন (৪৪) ও তার ভাই আশরাফুল ইসলাম মিঠুকে (৪৭) দুই কার্ডের বিপরীতে ৬০ কেজির পরিবর্তে পাঁচ মণ চাল সরবরাহ করেন। এর পর থেকে অতিরিক্ত প্রতি কেজি চালের দাম ৩০ টাকা হিসেবে নিবেন এমনটি জানালে মিঠু ও রতন ১০ টাকা কেজি দিতে চান। কিন্তু ডিলার শরিফ উদ্দীনকে ৩০ টাকা কেজি না দিলে চাল ফেরৎ নিবেন জানালে উভয় পক্ষের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। এরই জের ধরে শনিবার সকালে দক্ষিণ রাজাপুর মোড়ে চাল নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়।
একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘটে। এতে দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেনের ছেলে আশরাফুল ইসলাম মিঠু ও ছোট ভাই আব্দুর রউফ রতন এবং একই গ্রামের মৃত রিয়াজুল শেখের ছেলে ডিলার এসএম শরিফ উদ্দীন (৫৮) ছোট ভাই মোহাতাব হোসেন (৫৫) এবং মোহাতাবের ছেলে আবু সাইদ মৃদুল (১৮) আহত হয়। আহতদের রাণীনগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, ডিলার শরিফ উদ্দীনের গুদাম ঘরে কালো বাজারে বিক্রির জন্য চাল মজুদ রয়েছে এমনটি সংবাদ পেয়ে গত ৩০ মে দুপুরে নওগাঁ থেকে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গুদাম ঘর তল্লাশী করে চালের সন্ধান পায়। কিন্তু চাল ৩১ মে পর্যন্ত বিতরণ করা হবে এবং গ্রাহকরা আসেনি এমনটি জানালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফিরে যান ।
এব্যাপারে আহত আশরাফুল ইসলাম মিঠু জানান,আমরা দুই ভাই মিলে চাল ৩০ কেজি করে মোট ৬০ কেজি চাল পাবো । কিন্তু আমাদেরকে পাঁচ মণ চাল দেয়া হয়েছে। পরের দিন অতিরিক্ত চাল ৩০ টাকা কেজি দরে টাকা চেয়েছে। আমরা ১০ টাকা কেজি দিতে চাইলে দর নিয়ে মতোবিরোধ হয়। শনিবার সকালে চা-স্টলে এলে আবারো ৩০ টাকা কেজি দরে চালের টাকা দাবি করে। দাবিকৃত টাকা না দিলে চাল ফেরৎ নিয়ে আসবে এসব নিয়ে বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে ডিলার শরিফ ও তার লোকজন আমাদেরকে মারপিট করে আহত করে।
ডিলার এসএম শরিফ উদ্দীন বলেন, তাদের সাথে পারিবারিক ঝামেলায় মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। চাল নিয়ে কোন দ্বন্দ্ব হয়নি।
রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, চাল নিয়ে মারপিটের ঘটনার বিষয়টি শুনেছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রাণীনগর থানার ওসি মো: জহুরুল হক বলেন, মারপিটের ঘটনায় উভয় পক্ষকে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।