ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গেটের সামনে করোনাভাইরাস উপসর্গ আক্রান্তে আপন মাকে ফেলে রেখে পালিয়ে গেছে তার ছেলে। এ ঘটনাটি জানাজানি হলে হাসপাতাল ক্যাম্পের পুলিশ ওই মা মনোয়ারা বেগম মনিরাকে উদ্ধার করে করোনা ইউনিটে ভর্তি করেছেন।
আজ শনিবার বেলা ৩টার দিকে ঢামেকে করোনা ইউনিটের নতুন ভবনের ৭০২ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, আজ দুপুরে খবর পাই যে হাসপাতালের নতুন ভবনের গেটে সামনে এক মাকে তার ছেলে করোনা উপসর্গ আক্রান্ত সন্দেহে ফেলে রেখে গেছেন। এই নারীর শ্বাসকষ্ট, জ্বর ও গলা ব্যথা হচ্ছিল। পরে তাকে উদ্ধার করে করোনা ইউনিট ৭০২ নম্বর ওয়ার্ডের ১০ নম্বর বেডে ভর্তি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ওই নারীর নাম মনোয়ারা বেগম মনিরা (৫০)। তার স্বামীর শাহজাহান মিয়া। ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের বাসিন্দা । ঢাকায় পরিবার নিয়ে মিরপুর ১ নম্বর কমার্স কলেজের পাশের সালাম নামের এক ব্যক্তির বস্তিঘরে ভাড়া থাকতেন ।
ভুক্তভোগী ওই নারীর বরাত দিয়ে তিনি আরো জানান, সম্প্রতি তিনি শ্বাসকষ্ট, জ্বর ও গলা ব্যথা ভুগছিলেন । এর প্রেক্ষাপটে বাড়িওয়ালা সালাম তার সন্তানদের বলেন, তাকে ওই বাড়ি থেকে অন্য কোথাও নিয়ে যেতে। তার করোনার উপসর্গ দেখা দিয়েছে, বস্তিতে অন্যদের মাঝেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
তার পর মনিরার ছেলে মোজাম্মেল সরকার ও বাড়িওয়ালা সালাম দুদিন আগে মনিরাকে হাসপাতালের নতুন ভবনে গেটের সামনে ফেলে রেখে যায় । তারপর থেকে ঝড়-বৃষ্টিতে ভিজে এ নারী এখানেই পড়ে ছিলেন বলে জানান আশপাশের লোকজন। পরে পুলিশ খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
চিকিৎসকের বরাত দিয়ে ক্যাম্প ইনচার্জ জানান, ওই নারীর অবস্থা বেশি একটা ভালো নয়।
মনিরার ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢামেকে নতুন ভবনের ওয়ার্ড মাস্টার আবুল হোসেন বলেন, ওই মহিলাকে ভর্তি করা হয়েছে। তার শ্বাসকষ্টটা বেশি হচ্ছে। এখন তার কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।
তিনি আরো দুঃখ করে বলেন, কেমন ছেলেকে গর্ভে ধারণা করেছিলেন এই মা? কেই কি মাকে এ ভাবে কেউ ফেলে রেখে যায়?