নিজের হাতে লালন করা, যতেœ বড় করে তোলা পোষা প্রাণীটির প্রতি ভালোবাসা থেকে অনেকেই একটি ভুল করে ফেলেন। নিজে যা খাচ্ছেন, সেটাই তুলে দেন প্রিয় কুকুর কিংবা বিড়ালের মুখে। এ থেকে না জেনেই বিপদের মুখে ফেলে দেওয়া হয় ভালোবাসার প্রাণীটিকে। কারণ আপনার জন্য যে খাবারটি উপকারী, পোষা প্রাণীটির জন্য সেটা হতে পারে বিষাক্ত ও ক্ষতিকর। তাই জেনে রাখুন কোন ৭ ধরনের খাবার থেকে পোষা প্রাণীটিকে দূরে রাখতে হবে তার সুস্থতার জন্য।
চকলেট: চকলেট আপনার খুব প্রিয় খাবার হতেই পারে, কিন্তু তাই বলে প্রিয় পোষা কুকুর বা বিড়ালকেও চকলেট খাওয়াতে যাবেন না। চকলেটে থাকে থিওব্রোমাইন (ঞযবড়নৎড়সরহব) নামক একটি উপাদান, যা অনেকটা ক্যাফেইনের মতো কাজ করে। ফলে চকলেট কুকুর ও বিড়ালের জন্য বিষাক্ত উপাদানের মতো কাজ করে। চকলেট খাওয়ার ফলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কুকুর ও বিড়ালের বমি, ডায়রিয়া ও খিঁচুনির সমস্যা দেখা দেয়।
মাশরুম: মাশরুমের মাঝে দোকান থেকে কেনা পরিচিত ও ক্যানড মাশরুম কুকুর ও বিড়ালকে দেওয়া যেতে পারে। তবে অপরিচিত ও বন্য ঘরানার মাশরুম পোষা প্রাণীকে দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে অবশ্যই। শুধু প্রাণীর জন্য নয়, মানুষের জন্যেও সমানভাবে ক্ষতিকর ও ক্ষেত্র বিশেষে প্রাণনাশক হয়ে দাঁড়াতে পারে মাশরুম।
ময়ান দেওয়া ময়দা: ময়ান দিয়ে রাখা ময়দা বা আটা যেন কোনভাবে আপনার পোষা প্রাণী খেয়ে না ফেলে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ময়ান দেওয়া ময়দা খাওয়ার ফলে কুকুর/বিড়ালের গ্যাস্ট্রিক-ডাইলেশন ভল্ভালাস (এউঠ) নামক সমস্যা দেখা দিতে পারে। শুধু এটুকুই নয়, পেটপয়জনহেলপলাইন.কম এর মতে, আনবেকড ময়ান দেওয়া ময়দাতে থাকা ইস্ট পাকস্থলীতে যাওয়ার পর ফার্মেন্টেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়। যা থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন হয় ও পেটে ফোলাভাব দেখা দেয়। এ থেকে ইনটক্সিকেশনের সমস্যা ও খিঁচুনির মতো গুরুতর সমস্যাও তৈরি হতে পারে।
পেঁয়াজ ও রসুন: এই সবজিগুলো কুকুর ও বিরালের গ্যাস্ট্রোইনটেসটাইনাল ইরিটেশন তৈরি করতে পারে। সাথে রেড ব¬াড সেল ড্যামেজের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। যদিও বিড়াল ও কুকুর কাঁচা সবজি জাতীয় খাবার খাওয়ার বিষয়ে ভীষণ সতর্ক, তবুও ভুলবশত খেয়ে ফেললে দ্রুত পশু চিকিৎসকের নিকট নিতে হবে প্রাণীকে।
দুগ্ধজাত খাদ্য: প্রাণীদের শরীর মানুষের মতো পর্যাপ্ত পরিমাণ ল্যাকটোজ উৎপন্ন করতে পারে না। এই ল্যাকটোজ হলো এক ধরনের এনজাইম, যা মূলত দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্যে উপস্থিত ল্যাকটোজকে ভাঙতে কাজ করে। ফলে দুগ্ধজাত খাবার কুকুর ও বিড়ালের ডায়রিয়া ও পেটের সমস্যার কারণ হতে পারে।
আঙুর ও কিশমিশ: যদিও অবশ্য এই দুইটি খাদ্য উপাদানে উপস্থিত কোন বিষাক্ত উপাদানের জন্য এগুলো কুকুর ও বিড়ালের জন্য ক্ষতিকর সেটা জানা যায়নি, তবে এই দুইটি খাবারে কিডনি ফেইল্যুরের মতো সমস্যা দেখা দেয়। তাই সতর্কতার জন্য এই দুইটি খাবার দূরে রাখাই উচিত হবে পোষা প্রাণীর কাছ থেকে।
নারিকেল: যদিও নারিকেলের পানি, শাঁস ও নারিকেল তেল কুকুর ও বিড়ালের জন্য খুব বেশি ক্ষতিকর নয়, তবে নারিকেলে উপস্থিত তেল ওদের পাকস্থলী ভালোভাবে পরিপাক করতে পারে না। ফলে ডায়রিয়ার সমস্যা দেখা দেয়।