যুক্তরাজ্যের অনেক কোম্পানি গত ৪৮ ঘণ্টায় কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। এতে চাকরি হারাতে যাচ্ছে প্রায় ১২ হাজার মানুষ। মূলত দেশটির খুচরা বিক্রেতা ও বিমান চলাচল খাতের কোম্পানিগুলোই এই কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে চলমান লকডাউনের কারণে এই খাতগুলোই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে। তারা বলছে, করোনা মহামারির কারণে ব্যবসা–বাণিজ্য মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কর্মী ছাঁটাই করতে হচ্ছে।
লন্ডনের বৃহৎ পরিষেবা কোম্পানি জন লুইস বলেছে, তারা তাদের স্টোরগুলো বন্ধ করে দেবে। তবে এতে কতজন চাকরি হারাবে, তা নিশ্চিত করেনি কর্তৃপক্ষ। যুক্তরাজ্যের টপশপের মালিক আর্কেডিয়া এবং হ্যারোডস জানিয়েছেন, তারা মোট ১ হাজার ১৮০ জন কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করেছেন।
যুক্তরাজ্যে গত ৪৮ ঘণ্টায় যেসব কোম্পানি কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে তাদের মধ্যে আপার ক্রাস্টের মালিক এসএসপি গ্রুপ থেকে ৫ হাজার কর্মী, হ্যারডস থেকে ৭০০ কর্মী, আর্কিডিয়া থেকে ৫০০ কর্মী, শার্ট প্রস্তুতকারক টিএম লেউইন থেকে প্রায় ৬০০ কর্মী, ভার্জিন মানি, ক্লাইডেসডেল ও ইয়র্কশায়ার ব্যাংক থেকে ৩০০ কর্মী, যুক্তরাজ্যের বিমান নির্মাতা এয়ারবাস থেকে ১ হাজার ৭০০ কর্মী, ইজি জেট থেকে ১ হাজার ৩০০ ক্রু এবং ৭২৭ পাইলট ছাঁটাই হচ্ছে।
করোনা মহামারি ঠেকাতে ২৩ মার্চ থেকে লকডাউনে যায় যুক্তরাজ্য। এতে ব্যবসা–বাণিজ্য মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন যদিও ধীরে ধীরে নিষেধাজ্ঞা সহজ করা হচ্ছে, তবে গ্রাহকের চাহিদা এখনো হতাশাজনক।
এদিকে ছাঁটাইয়ের এ ঘোষণায় আতঙ্কিত কর্মীরা। যন্ত্র প্রকৌশলী জেমস ফিলিপস বিবিসিকে বলেন, তিনি আশঙ্কা করছেন যে তাকে ছাঁটাই করা হতে পারে। তিনি মার্চ থেকে সাময়িক ছুটিতে ছিলেন। এখন তাকে তার নিয়োগকর্তার সঙ্গে ছাঁটাইয়ের একটি পরামর্শ সভায় অংশ নিতে বলা হয়েছে।
বেশির ভাগ ব্যবসার ক্ষেত্রে কর্মী খরচই সবচেয়ে বড় ব্যয়। অনেক কোম্পানি শ্রমিকদের বেতনভাতা দিতে সরকারের সাময়িক ছুটির স্কিম ব্যবহার করছে। এই কর্মসূচির আওতায় ৯০ লাখের বেশি শ্রমিকের ৮০ ভাগ মজুরি প্রদান করা হয়েছে। তবে আগামী মাস থেকে এই কর্মসূচি ফিরিয়ে নেওয়া শুরু হবে এবং তা অক্টোবরে শেষ হবে।
দেশটির বেশিরভাগ কোম্পানিই ইমেইল বার্তায় কর্মীদের জানিয়েছে, এই মহামারির চলমান প্রভাবের কারণে ব্যবসা পরিচালনায় তাদের কর্মশক্তি কমাতে হচ্ছে। হ্যারোডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাইকেল ওয়ার্ড স্টাফদের এক ইমেইল বার্তায় বলেছেন, ‘আমাদের প্রায় ৪ হাজার ৮০০ কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৪ শতাংশ ছাঁটাই করতে বাধ্য হচ্ছি। তিনি আরও বলেন, ‘সব ঠিকঠাক হলে আবার কর্মী নিয়োগ দেব আমরা।’