সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ শুক্রবার বিকেলে উত্তরার নিজের ভাড়া বাসা থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সিলেটে ‘এমএ হক স্বাস্থ্যসেবা’ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব।
বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে দলটির মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা সবাই জানেন, আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে তাকে আটক করে রাখা হয়েছে। মাত্র ৬ মাস স্থগিত করে তাকে বাসায় রাখা হয়েছে। সেখানে তাকে (খালেদা জিয়া) বলা হয়েছে যে, তিনি চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে পারবেন না। অথচ তার চিকিৎসাটাই এখন বিদেশে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। ’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকারের চরম অবহেলা, অবজ্ঞা, অজ্ঞানতা এবং তাদের যে একটাই লক্ষ্য চুরি সেই কারণেই আজকে করোনা পরিস্থিতি এই অবস্থায় দাঁড়িয়েছে, সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।’
হজ ক্যাম্পে আইসোলেশনের থাকা প্রবাসীদের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে বিদেশ থেকে যারা ফেরত আসছেন তাদের স্ক্যানিং টেস্টে সবাই তারা করোনামুক্ত। অথচ বিবিসি বাংলা বিভাগের একজন সাংবাদিক তিনি হজ ক্যাম্পে গিয়ে যাত্রীদের মধ্য একজনকে জিজ্ঞাসা করেছেন। তিনি (যাত্রী) জবাবে বলেছেন, আমাদের কোনো স্ক্যানিংই হয়নি। দেখেন, কতটা দায়িত্বহীন হতে পারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, কতটা উদাসীন হতে পারে সরকার। এত ঘটনার পরেও হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করার পর, লাখ লাখ লোক আক্রান্ত হওয়ার পর যখন একেবারে জীবন-জীবিকা সব কিছু ওলোট-পালট হয়ে যাচ্ছে সেই সময়েও তারা তাদের ন্যূনতম যে দায়িত্ব সেটা পালন করছে না।’
‘সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকার কোনো দরকার নেই। আমাদের নিজেদেরকেই চেষ্টা করতে হবে বাঁচার জন্য, আমাদের নিজেদেও চেষ্টা করতে হবে যেন এটা (করোনাভাইরাস) না ছড়ায়, এই সংক্রমণ যেন না বাড়ে। এই সরকার যেহেতু জনগণের সাথে সম্পর্ক নেই, জনগণের জীবন-জীবিকার প্রতি তাদের কোনো দায়িত্ববোধ নেই, সেই কারণে তাদের দিকে তাকিয়ে থেকে দেশের অগনিত মানুষ তারা এই ভয়াবহ ভাইরাস থেকে রক্ষা পাবে না’, বলেন তিনি।
রিজেন্ট হাসপাতাল করোনা পরীক্ষার ভুঁয়া সার্টিফিকেট সরবারহের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রিজেন্ট হাসপাতালের প্রধান সাহেদ। তারা কোনো পরীক্ষা না করেই করোনা টেস্টেও রেজাল্ট দিচ্ছে। এটা তো একদিকে জীবনের প্রশ্ন। মারাত্মকভাবে স্বাস্থ্যের সমস্যা। অন্যদিকে যে পরিণতি। ইতিমধ্যে সমস্ত বিশ্বে আলোচনা শুরু হয়েছে। গ্লোবাল মিডিয়াতে চলে গেছে। সব এয়ারলাইন্সগুলো বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এর একটা বড় প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে। এর দায়-দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে এই সরকারের। কারণ, টেলিভিশনের ছবিতে যা দেখলাম-এই সাহেদ সাহেব তিনি সরকারের সব মন্ত্রী, দলের শীর্ষনেতাদের সাথে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্ক। এটা একটা না, এমন বহু ঘটনা আছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে দেখলাম, একজন মিঠু (ঠিকাদার) সাহেব যাকে বলা হচ্ছে তিনি নাকি গোটা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে গিলে ফেলেছেন।’
সিলেট জেলা সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ডা. শামীমুর রহমানের সভাপতিত্বে ও মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কয়েস লোদীর পরিচালনায় ভার্চুয়াল এই আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন—বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, কলিম উদ্দিন মিলন, আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, মিজানুর রহমান চৌধুরী, মহানগর সভাপতি নাসিম হোসাইন, জেলা সভাপতি আলী আহমদ, প্রয়াত এমএ হকের ছেলে ব্যারিস্টার রিয়াসাদ আজিম হক প্রমুখ।