আমাদের শরীরে আছে সায়টিক নামে একটি স্নায়ু, যা মেরুদণ্ডের লাম্বার স্পাইনের শেষ দিকের কশেরুকা বা ভাটিব্রারা এল ৩, ৪, ৫ এবং সেকরাল স্পাইনের এস ১ কশেরুকা বা ভাটিব্রারা থেকে ঊরুর পেছন দিক দিয়ে হাঁটুর নিচের মাংসপেশির মধ্য দিয়ে পায়ের আঙুল পর্যন্ত বিস্তৃত। যখন কোনো কারণে এ স্নায়ুর ওপর চাপ পড়ে, তখন স্নায়ুর বিস্তৃতি অনুযায়ী ব্যথা কোমর থেকে পায়ের নিচ পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। এর নামই সায়টিকা।
লক্ষণ : কোমর ব্যথা। ব্যথা কোমর থেকে পায়ের দিকে ছড়িয়ে যায়। অনেক সময় কোমরে ব্যথা থাকে না কিন্তু ঊরুর পেছন থেকে শুরু করে হাঁটুর নিচের মাংসপেশির মধ্যে বেশি ব্যথা করে। বিশ্রামে থাকলে বা শুয়ে থাকলে ব্যথা কম থাকে কিন্তু খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে বা হাঁটলে ব্যথা বেড়ে যায়। এমনকি কিছুক্ষণ হাঁটলে আর হাঁটার ক্ষমতা থাকে না, কিছুটা বিশ্রাম নিলে আবার কিছুটা হাঁটতে পারে। আক্রান্ত পা ঝিনঝিন বা অবশ ভাব হয়।
রোগ নির্ণয় : রোগ নির্ণয়ে রোগের ইতিহাস, উপসর্গ ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি লাম্বো-সেকরাল স্পাইনের (মেরুদ-ের নিচের অংশ) এক্স-রে, এমআরআই করার প্রয়োজন পড়ে।
চিকিৎসা : পরিপূর্ণ বিশ্রাম, মাসল রিলাক্স্যান্ট জাতীয় ওষুধ আর সঠিক ফিজিওথেরাপি বা ব্যায়ামের মাধ্যমে রোগী ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে। মনে রাখা প্রয়োজন, এ জাতীয় রোগে শরীরে ব্যথার জায়গায় মালিশ করা চলবে না। এতে হিতে বিপরীতের আশঙ্কা বেশি থাকে।
পরামর্শ : সামনের দিকে ঝুঁকে ভারী কিছু ওঠাবেন না। শক্ত বিছানায় ঘুমাবেন। ভ্রমণ বা কাজ করার সময় কোমরে বেল্ট ব্যবহার করবেন। ব্যথার ওষুধ এবং মাসল রিলাক্স্যান্ট জাতীয় ওষুধ ডাক্তারের নির্দেশ অনুযায়ী সেবন করবেন। ফিজিওথেরাপিস্টের নির্দেশিত ব্যায়াম করতে হবে।