ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন হত্যা মামলার প্রধান আসামি মামুন র্যাবের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার দিবাগত মধ্যরাতে সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের চান্দপুর বাজারের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মামুন চান্দপুর গ্রামের মুছা মিয়ার ছেলে। র্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্পের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক চন্দন দেবনাথ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন খুনের মামলার প্রধান আসামি মামুনকে গ্রেপ্তারে র্যাবের একটি দল গতকাল রাতে সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের পাঘাচং চান্দপুর বাজারে অভিযান চালায়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে মামুন ও তার সহযোগীরা গুলি চালান। আত্মরক্ষার্থে র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। এ সময় মামুন গুলিবিদ্ধ হন এবং তার সহযোগীরা পালিয়ে যান। পরে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, চারটি গুলি ও একটি ছোরা জব্দ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে রাখা আছে বলে জানান র্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্পের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক চন্দন দেবনাথ।
তিনি আরও বলেন, নিহত মামুনের বিরুদ্ধে সদর থানায় পাঁচটি মাদক, একটি অস্ত্র ও দুটি ডাকাতি প্রস্তুতির মামলা রয়েছে। ২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে এসব মামলা হয়। দীর্ঘদিন ধরে তিনি পলাতক ছিলেন। কয়েক মাস আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ২০১৬ সালের ৩ জানুয়ারি করা ডাকাতির প্রস্তুতির একটি মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জরি করেন।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার বিকেলে সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি মূলে মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও মামুনকে গ্রেপ্তারে পাঘাচং চান্দপুর বাজারে সাধারণ পোশাক পরে অভিযান চালান এএসআই আমির হোসেন ও মনি শংকর চাকমা। পাঘাচং চান্দপুর বাজারে চাচা জালাল মিয়ার দোকানের সামনে থেকে গ্রেপ্তারের সময় দুই পুলিশ সদস্যের সঙ্গে মামুনের ধস্তাধস্তি হয়।
এ সময় মামুন নিজের কোমরে থাকা ছোরা দিয়ে এএসআই আমিরকে ছুরিকাঘাত করেন এবং মনি শংকরকে মারধর করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক এএসআই আমিরকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় এএসআই মনি শংকর চাকমা মামুন, তার ছোট ভাই ইসমাইল, আবুলসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। পরে শুক্রবার রাতেই ইসমাইল ও আবুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।