ছানির প্রাথমিক অবস্থায় চশমার মাধ্যমে দৃষ্টির প্রখরতা বাড়ানো সম্ভব। তবে রোগী যখন স্বাভাবিক কাজকর্মে অসুবিধা বোধ করেন, তখন অপারেশনের প্রয়োজন পড়ে। তবে এ নিয়ে বিভ্রান্তি হলো- ছানি সম্পূর্ণ না পাকলে তা অপারেশনযোগ্য নয়। এ ধারণা ঠিক নয়। বরং বেশি পেকে গেলে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে এবং পরে অপারেশন করেও আশানুরূপ দৃষ্টি ফিরে নাও আসতে পারে। ছাানির অপারেশনগুলো হলো-
ফ্যাকো সার্জারি : ছানির আধুনিক চিকিৎসা হচ্ছে ফ্যাকো সার্জারি। চোখের পাশে ২ থেকে ৩ মিলিমিটার ছিদ্র করে এ অপারেশন করা হয়। লেন্সের ওপরের আবরণে গোল করে কেটে এটির মধ্যে ফ্যাকো মেশিনের মাধ্যমে আল্ট্রাসনিক পাওয়ার দিয়ে লেন্সটি টুকরো টুকরো করে গলানো হয়। এভাবে লেন্সটি সম্পূর্ণ পরিষ্কার হয়ে গেলে এ আবরণের মধ্যে একটি কৃত্রিম লেন্স বসানো হয়। ফোল্ডঅ্যাবল লেন্স বা ভাঁজ করা যায় এমন লেন্স ব্যবহার করলে ওই ছিদ্র দিয়ে লেন্স ভাঁজ করে প্রবেশ করানো হয়। চোখের ভেতরে এ লেন্সটি সুন্দরভাবে সেট হয়ে যায়। ফোল্ডঅ্যাবল লেন্স ব্যবহার না করলে ওই ছিদ্রটি ৫-৬ মিলিমিটার বড় করে ওই মাপের পিএমএমএ বা হার্ড লেন্স প্রবেশ করানো হয়। দুই পদ্ধতিতেই সেলাইয়ের প্রয়োজন হয় না। অভিজ্ঞ ফ্যাকো সার্জনরা চোখের পাশে একটি ইনজেকশন দিয়ে অবশ করে অথবা কোনো কোনো রোগীকে ইনজেকশন ছাড়াই শুধু ফোঁটা ওষুধ ব্যবহার করে চোখের ওপরে অবশ করে এ অপারেশন করে থাকেন।
এসআইসিএস : লেন্স বেশি ম্যাচিউর হয়ে গেলে অনেক সময় মেশিনের মাধ্যমে লেন্স গলানো কঠিন এবং ঝুঁকিপূর্ণ হয়। এ ক্ষেত্রে স্মল ইনসিশন ক্যাটার্যাক্ট সার্জারি বা এসআইসিএস খুব উপযোগী। এ পদ্ধতিতে ফ্যাকো পদ্ধতির মতো লেন্সের আবরণীর ওপরের অংশ গোল করে কেটে এটির ভেতর থেকে লেন্সের শক্ত অংশ বা নিউক্লিয়াসটি পানি, জেল বা ভেকটিস যন্ত্রের সাহায্যে বের করা হয়। পরে লেন্সের নরম অংশ পরিষ্কার করে সাধারণত হার্ড লেন্স চোখে দেওয়া হয়। এ অপারেশনে লেন্সের ম্যাচিউরিটি অনুযায়ী ৫-৭ মিলিমিটার পরিমাণ ইনসিশন দেওয়ার প্রয়োজন হয়। এ অপারেশনেও সাধারণত সেলাই প্রয়োজন হয় না। অভিজ্ঞ সার্জনের হাতে এ অপারেশনের ফলও খুব ভালো।
এ ছাড়া ইসিসিই অপারেশনের মাধ্যমে অপেক্ষাকৃত পুরনো ছানি কাটা হয়।