নেতা-কর্মীদের মুক্তি না দিলে রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ বুধবার দুপুরে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এই হুশিয়ারি দেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘গতকালও ফেনী জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন রিয়াদকে কোনো কারণ ছাড়া গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রতিদিন বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। করোনা ও বন্যায় তারা ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছে এটাই তাদের অপরাধে।’
২০১৮ সালে ইসহাক সরকারকে নামে এক নেতাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে ৩২৬টি মামলা রয়েছে। রিজভী বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ইসহাক সরকারকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে, কারাবন্দী নেতা-কর্মীদের মুক্তি দিতে হবে। এই মুক্তি যদি বাধাগ্রস্থ হয় আর ফুটপাত নয়। এবার রাজপথের সমস্ত কংক্রিট উড়িয়ে আমরা রাস্তায় ব্যারিকেড তৈরি করব।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে রিজভী বলেন, ‘আপনি তো ক্ষমতায় টিকে আছেন বন্দুকের জোরে। অনেক সময় বন্দুক কাজ করে না, অকার্য্কর হয়ে যায় জনগণের কাছে।’
দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারে সরকারের নীতির কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ফরিদপুরের ছাত্রলীগের নেতা দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িত : এটা তো ঢাকতে হবে। ফরিদপুরের দুই আওয়ামী লীগ নেতা ওই শহরে মার্সিটিজ গাড়ি চালায়, এই গুলোকে তো ঢাকতে হবে। জেকেজির সাবরিনার ঘটনাকে ঢাকতে হবে, রিজেন্ট হাসপাতালের সাহেদকে তো ঢাকতে হবে, ক্যাসিনোর সম্রাটকে তো ঢাকতে হবে। তাই ছাত্রদলের রিয়াদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাই ইসহাক সরকারকে দুই বছরের বেশি সময়ে আটকে রাখা হয়েছে।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকারের কোনো ভিত্তি নাই। তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বিচ্ছিন্ন না হলে প্রধানমন্ত্রী আপনার এত ক্ষমতা, আপনি যাকে তাকে ক্রসফায়ার দিতে পারেন, যাকে তাকে গুম করতে পারেন কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে ভয় পান। দিনের নির্বাচন রাতে করেন। কারণ ওই সাহস আপনার নাই। জনগণ আপনার শত্রু। তাই জনগণকে ভয় পেয়ে রাতের অন্ধকারে চোরের মতো জনগণের ভোট ছিনতাই করে ইসহাক সরকারদের বন্দি করে রেখেছেন।’
১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টের ঘটনাবলীকে মিলিয়ে সরকার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও গণতন্ত্রের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।
সংগঠনের আহ্বায়ক আবদুস সাত্তার পাটোয়ারির সভাপতিত্বে সাবেক ছাত্রনেতা আহসান উদ্দিন খান শিপনের পরিচালনায় মানববন্ধনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, মহানগর দক্ষিণের তাইজুল ইসলাম, কারাবন্দি নেতা ইসহাক সরকারের ভাই ইয়াকুব সরকার প্রমুখ বক্তব্য দেন।
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের ফুটপাতে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের উদ্যোগে ছাত্র দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকারের মুক্তির দাবিতে এই মানববন্ধন হয়। বিএনপির আমিনুল ইসলাম, মৎস্যজীবী দলের আবদুস রহিম, সাবেক ছাত্র নেতা আবদুল হালিম খোকন, কাজী ইফতেখারুজ্জামান শিমুল, মোর্শেদ আলম,ছাত্র দলের পাভেল শিকদার, মাইনুদ্দিন নিলয়, তৌ্হিদ আউয়াল, নাসিরউদ্দিন নাসির, সালেহ মো. আদনান, হাবিবুর রহমান, আরিফুর রহমান এমদাদ, সোহাগ মোল্লা, আপেল মাহমুদ, সোহেল রানা, আকরাম আহমেদ, সাইফুল আলম বাদশা, সাকিব হাসান, আহসানুল হাবিব দুলাল, বেলাল হোসেন খান প্রমুখ এতে উপস্থিত ছিলেন।